Advertisement
প্রযুক্তি

BSNL নিজেদের 4G পরিষেবা চালু করতে পারছে না রতন টাটার কোম্পানির জন্য!

ব্যর্থ হয়ে যাচ্ছে একের পর এক পরিকল্পনা। চলতি বছরের দ্বিতীয়ার্ধে এদেশে 4G পরিষেবা নিয়ে আসতে রীতিমতো বদ্ধপরিকর Bharat Sanchar Nigam Limited বা BSNL। রাষ্ট্রায়ত্ত টেলিকম সংস্থাটি 4G পরিষেবা চালু করতে টাটা কনসালটেন্সি সার্ভিসেস বা টিসিএস (TCS) এবং সেন্টার ফর ডেভেলপমেন্ট অফ টেলিম্যাটিক্স (C-DoT)-এর সাহায্য নিচ্ছে।  সম্প্রতি সংস্থার টি থেকে বলা হয়েছিল বছরের প্রথমেই এই পরিষেবা চালু হবে কিন্তু এই পরিকল্পনা ক্রমশ পিছিয়ে যাচ্ছে। কিন্তু এরকম বিড়ম্বনার কারণ কি? এর জবাবে সম্প্রতি BSNL জানিয়েছে যে, একসময় রতন টাটা চালিত কোম্পানি, TCS লাইভ কন্ডিশনে ফিল্ড ট্রায়াল শুরু না করার কারণেই এই ঘটনা ঘটছে। সংস্থাটির বিবৃতি অনুযায়ী জানা যায়, TCS-এর পক্ষ থেকে ২০০ টি সাইটের একটি পাইলট নেটওয়ার্ক সাপ্লাই এবং লঞ্চ করার কথা ছিল, যা বাস্তবে হয়ে ওঠেনি। তাই আপামর দেশবাসীকে বেশ খানিকটা অপেক্ষা করতে হবে BSNL-এর 4G পরিষেবার মুখ দেখার জন্য।

প্রথমে জানা যায়, এদেশে বিএসএনএলের ৪জি সার্ভিসের আগমন ঘটবে গত বছরের আগস্ট মাসে। কিন্তু ফের এই পরিষেবা রোলআউট হয় গত বছর নভেম্বর মাসে। এরপর বিএসএনএল জানায় যে, চলতি বছরের জানুয়ারির মধ্যেই ভারতে কোম্পানির ৪জি সার্ভিসের দেখা মিলবে। আবার ইলেকট্রনিক্স ও তথ্য প্রযুক্তি মন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণব কিছুদিন আগেই জোর গলায় বলেছেন, আগামী মার্চ মাসের মধ্যেই এদেশে উপলব্ধ হবে রাষ্ট্রায়ত্ত কোম্পানিটির ৪জি পরিষেবা । তবে সমস্ত জল্পনাকে মিথ্যে করে দিয়ে সম্প্রতি জানা গিয়েছে যে, ২০২৩ সালের দ্বিতীয়ার্ধে এদেশে ৪জি সার্ভিস লঞ্চ করবে বিএসএনএল। তবে নিশ্চিতভাবে কবেই পরিষেবা চালু হবে তার উত্তর একমাত্র সময়ের কাছেই রয়েছে।

উল্লেখ্য ভারত সরকার দ্বারা ২০২২ সালের অক্টোবর মাসে ঘোষণা করা হয়, আগামী ৫০০ দিনের মধ্যে ২৫,০০০ টি ৪জি টাওয়ার স্থাপনের পরিকল্পনা করছে বিএসএনএল। অপরদিকে রাষ্ট্রায়ত্ত টেলিকম সংস্থাটি পূর্বে সারা দেশে ১ লক্ষেরও বেশি সাইটকে ৪জি-তে আপগ্রেড করার কথা ভেবেছিল। কিন্তু এই বিষয়টি বেশ কঠিন হয়ে দাঁড়িয়েছে, এই পরিকল্পনাকে বাস্তবায়িত করার জন্য সংশ্লিষ্ট অনুমোদন কমিটির কাছ থেকে এখনও পর্যন্ত সবুজ সংকেত পাওয়া যায়নি। হিন্দুবিজনেসলাইন এর একটি প্রতিবেদনে বলা হয়, এখনও শুরু হয়নি টিসিএসের ফিল্ড ট্রায়াল।উপরন্তু, ৪জি-তে সাইটগুলিকে আপগ্রেড করার কাজও চলতি বছরের সেপ্টেম্বরের আগে শেষ করা সম্ভব হবে না। ইতিমধ্যে এই সংস্থাটি বেশ সংসাতেও রয়েছে, আদৌ ২০২৩ সালে এদেশে ৪জি পরিষেবা রোলআউট করতে পারবে কি না, তা নিয়ে। যেহেতু ৪জি লঞ্চের টাইমলাইন সম্পর্কে সংস্থাটির কোনো প্রতিশ্রুতিই এখনও পর্যন্ত বাস্তবায়িত হয়নি, তাই অনেকেই মনে করছেন যে, ভারতে বিএসএনএলের ৪জি পরিষেবা আসতে আসতে ২০২৪ সাল পর্যন্ত সময়ও লেগে যেতে পারে।

এক্ষেত্রে বেসরকারি টেলিকম কোম্পানিগুলি বেশ লাভবান হয়ে উঠছে, তার কারণ এদেশে BSNL-এর 4G পরিষেবা যত দেরিতে আসবে, তত বেশি তাদের লাভ। অপরদিকে দেশের অন্যতম প্রধান দুই টেলিকম অপারেটর Reliance Jio এবং Airtel ভারতের একাধিক শহরে 5G পরিষেবা রোলআউট করে ফেলেছে। বর্তমানে বিপুল সংখ্যক ইউজার নিজেদের 4G সিম মারফতই এই বিদ্যুৎ গতির নেট সার্ভিস সম্পূর্ণ সীমাহীনভাবে (আনলিমিটেড) ব্যবহার করার সুযোগ পাচ্ছেন। তাই বিএসএনএল এর যখন 4G পরিষেবা চালু হবে তত দিনে সাধারণ মানুষ অর্থাৎ ইউজাররা 5G পরিষেবা ব্যবহার করতে অভ্যস্ত হয়ে যাবেন। তাই বেশ সন্দেহের মধ্যে বিষয়টি রয়েছে যে, সরকারি মালিকানাধীন টেলিকম কোম্পানিটির 4G সার্ভিস সম্পর্কে আপামর জনগণের আগ্রহ ততদিন পর্যন্ত বজায় থাকবে কি না এই বিষয়ে। তাই যতদিন 4G পরিষেবা চালু হচ্ছে ততদিন যদি মানুষ 5g পরিষেবাতে অভ্যস্ত হয়ে যান তাহলে এই প্রতিযোগিতার বাজারে অনেকটাই পিছিয়ে পড়বে বিএসএনএল। BSNL আদৌ বেসরকারি কোম্পানিগুলিকে টেক্কা দিয়ে ব্যবসায় ঘুরে দাঁড়াতে পারবে কি না, সেটা একমাত্র সময়ই বলতে পারবে।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Adblock Detected

Please Turn Off Your Ad Blocker.