এবার নতুন মোড় নিল কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশে সিবিআইয়ের করা নিয়োগ দুর্নীতির তদন্তে। শিক্ষা দপ্তর এবার বিভিন্ন স্কুলে গ্রুপ ডি পদে নিয়োগ হওয়া ১৬৯৮ জনকে এ বার নোটিস ধরানোর প্রক্রিয়া শুরু করে দিল। এমনই নির্দেশিকা জারি করা হয়েছে 23 শে ডিসেম্বর শিক্ষা দপ্তর থেকে। সেই নির্দেশিকাটি জারি করেছেন শিক্ষা দফতরের কমিশনার শুভ্র চক্রবর্তী। নির্দেশিকাটি পাঠানো হয়েছে বিভিন্ন জেলার ডিস্ট্রিক্ট ইন্সপেক্টর (ডিআই)-দের। বলা হয়েছে নির্দেশিকায়, কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশে কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা সিবিআই তদন্তে চিহ্নিত ১৬৯৮ জন গ্রুপ ডি পদে নিয়োগ হওয়া ব্যক্তিকে নোটিস ধরাতে হবে। সেই নোটিসের সঙ্গে আদালতের রায়টিও যুক্ত করে দিতে বলা হয়েছে। রাজ্যের বিভিন্ন স্কুলে নিযুক্ত ১৬৯৮ জনের নিয়োগের ক্ষেত্রে বেনিয়ম ধরা পড়েছে বলেই অভিযোগ।
১৬৯৮ জনের নামও তালিকায় প্রকাশ করা হয়েছে নির্দেশিকার সঙ্গে। বর্তমানে তাঁরা কোন কোন স্কুলে কর্মরত রয়েছেন তা-ও জানিয়ে দেওয়া হয়েছে। চলতি সপ্তাহের মধ্যেই প্রত্যেক ডিআইকে তাঁদের কাজ শেষ করতে বলা হয়েছে। স্কুলে নিয়োগের দুর্নীতি মামলায় কলকাতা হাইকোর্ট সিবিআইকে তদন্তের নির্দেশ দেয়। সেই নির্দেশেই তদন্ত করে কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা যে রিপোর্ট আদালতে জমা দিয়েছে, তাতে গ্রুপ ডি পদে চাকরি পাওয়া ১৬৯৮ জনের নিয়োগ প্রক্রিয়ায় অস্বচ্ছতা রয়েছে। সেই রিপোর্ট খতিয়ে দেখে ওই চাকরিপ্রার্থীদের নোটিস ধরাতে আদালত নির্দেশ দেয় শিক্ষা দফতরকে। আর সেই নির্দেশ কার্যকর করতেই এই নোটিস দিতে বলেছেন শিক্ষা দফতরের কমিশনার।
আদৌ কি কোন লাভ হবে এমন নোটিশ ধরিয়ে? শিখা মহলের একাংশ ইতিমধ্যে প্রশ্ন তুলেছেন এই নিয়ে। প্রশাসনের তরফে জানা যাচ্ছে, এই নোটিসের মাধ্যমে ওই চাকরিপ্রাপকদের বর্তমান পরিস্থিতি প্রসঙ্গে অবগত করানো হচ্ছে, যাতে তাঁরা আদালতের সামনে আগামী দিনে নিজেদের অবস্থান স্পষ্ট করার সুযোগ পান। শিক্ষা দফতরের এমন নোটিসের বিষয়ে বঙ্গীয় শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মী সমিতির নেতা স্বপন মণ্ডল বলেন, ‘‘আমরা জানতে পেরেছি, সিবিআই যে রিপোর্টটি আদালতে জমা দিয়েছে, তাতে লেখা হয়েছে, এমন ব্যক্তিরাও চাকরি পেয়েছেন, যাঁরা একটি জবাব না দিয়েও পাশ করেছেন। সরকারের এমন পদক্ষেপ সত্যিই দুর্ভাগ্যজনক। রাজ্য সরকার বা যে রাজনৈতিক দল সরকার চালাচ্ছে, তাদের এই ভুল পদক্ষেপের জন্য কতগুলো মানুষের সংসার ভেসে যেতে পারে। কারণ ১৬৯৮ জনের চাকরি যে চলে যাওয়া সময়ের অপেক্ষা, তা বোঝাই যাচ্ছে।’’