Advertisement
রাজ্য

কড়া নিরাপত্তায় নির্বিঘ্নেই মিটল টেট, শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বললেন, কোনও অভিযোগ আসেনি

প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষা (টেট) মোটামুটি নির্বিঘ্নেই শেষ হল।ছোটখাটো অভিযোগ উঠলেও তার কোনও আঁচ পড়েনি পরীক্ষায়।রবিবার টেট দিলেন প্রায় ৭ লক্ষ পরীক্ষার্থী কড়া নিরাপত্তায়।

দুর্নীতির মামলা এখনও চলছে আদালতে প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ নিয়ে। হাইকোর্ট তাতে বারবার কড়া ধমক দিয়েছে। কমবেশি অভিযোগ উঠেছে রবিবার টেট নিয়েও।তিনি জানিয়েছেন, টেট মিটেছে নির্বিঘ্নে। তাঁর কথায়, ‘‘আমাদের কাছে কোনও অভিযোগ আসেনি। পরীক্ষা নির্বিঘ্নেই হয়েছে।’’  পরীক্ষার্থীদেরও অভিনন্দন জানিয়েছেন।তিনি বলেন, ‘‘সব পরীক্ষার্থীকে অভিনন্দন, শুভেচ্ছা জানাই। গণউৎসবের মতো পরীক্ষায় শামিল হয়েছেন তাঁরা।’’ আর দু্র্নীতি প্রসঙ্গে স্পষ্টই জানিয়েছেন, পিছনের দিকে না ফিরে সামনে দেখা উচিত।

মুখ্যমন্ত্রীকে ধন্যবাদ দিয়েছেন প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের সভাপতি গৌতম পাল।বলেছেন, ‘‘রবিবার যে এত সুষ্ঠু ভাবে পরীক্ষা মিটেছে, তার জন্য কয়েক জনকে ধন্যবাদ না দিলেই নয়। প্রথমেই ধন্যবাদ মুখ্যমন্ত্রীকে।’’ এরপর তিনি ধন্যবাদ দিয়েছেন মুখ্যসচিব হরিকৃষ্ণ দ্বিবেদী, পুলিশ, প্রশাসন, জেলাস্তরের আমলা, শিক্ষাকর্তাদের।পর্ষদের আধিকারিক, বিভাগীয় কর্মীদেরও ধন্যবাদ জানিয়েছেন তিনি।

টেট হয়েছিল ২০১৭ সালে শেষ বার। প্রাথমিক শিক্ষা নিয়োগ পরীক্ষা হলো আবার রবিবার।বিক্ষিপ্ত কয়েকটি ঘটনা ছাড়া নির্বিঘ্নে মিটেছে পরীক্ষা।কয়েকটি স্কুলে পরীক্ষার্থীদের ঢুকতে না দেওয়ার অভিযোগে বিশৃঙ্খলা তৈরি হয়। জানা গিয়েছে, সঠিক সময়ে পরীক্ষা কেন্দ্রে পৌঁছতে পারেননি বলেই তাঁদের প্রবেশে বাধা দেওয়া হয়েছিল। পরীক্ষাকেন্দ্রে ব্যাগ রাখা নিয়েও কিছু কেন্দ্রের পরীক্ষার্থীরা অভিযোগ করেন। তাঁরা জানান, পরীক্ষাকেন্দ্রে ব্যাগ রাখার জায়গা নেই।

প্রশ্নপত্র ফাঁস হবার অভিযোগ ওঠে পরীক্ষার শুরুতেই। সাংবাদিকদের স্পষ্ট জানিয়ে দেন কোন প্রশ্নপত্র ফাঁস হয়নি শিক্ষা মন্ত্রী।তাঁর কথায়, ‘‘যে ছবি ঘুরছে, তা আসলে ভুয়ো প্রশ্নের। পর্ষদকে বললাম। পর্ষদ খোঁজ নিল। জানল ‘ফেক’। মমতার সরকার যাতে পরীক্ষা না নিতে পারে, তার চেষ্টা চলছে। পরীক্ষা নেওয়া গিয়েছে।’’

খুশি পরীক্ষার্থীরা পরীক্ষা দিয়ে। বিভিন্ন অভিযোগের মাঝেই তারা স্পষ্ট জানিয়েছেন পরীক্ষা ভালো হয়েছে।ভাল হয়েছে প্রশ্নপত্র। চাকরি পাওয়া নিয়ে তাঁরা যথেষ্ট আশাবাদী। প্রথম বারের পরীক্ষার্থীদের কেউ কেউ জানিয়েছেন, সময়ে শেষ করতে কিছুটা সমস্যার মুখে পড়েছেন। দুর্নীতি রুখতে এ বার অতিরিক্ত সতর্কতা নিয়েছে পর্ষদ। তার মধ্যে অন্যতম হল এই উত্তরপত্রের প্রতিলিপি। শিক্ষামন্ত্রী জানিয়েছেন, এ বার দু’টি উত্তরপত্র রয়েছে। অর্থাৎ উত্তরপত্রের কার্বন প্রতিলিপি। পরীক্ষার্থীরা একটা উত্তরপত্র বাড়ি নিয়ে যাবেন। যাতে পরে মিলিয়ে দেখতে পারেন। এক পরীক্ষার্থী তানিয়া রায় জানালেন, এতে সুবিধা হবে তাঁদের। বাড়ি গিয়ে দেখতে পারবেন ঠিক কী ভুল করেছেন।

শিক্ষা মন্ত্রী নিজেই গোটা ব্যবস্থার কথা জানিয়েছেন সাংবাদিকদের কাছে।তিনি বলেছেন, ‘‘প্রত্যেক পরীক্ষার্থীর বায়োমেট্রিক ভেরিফিকেশন হচ্ছে। তল্লাশি চলছে। পরীক্ষাকেন্দ্রে দু’টি পদ্ধতিতে বায়োমেট্রিক যাচাই হচ্ছে। ফেস রিকগনিশন। অর্থাৎ মুখমণ্ডল চিনে রাখা এবং আঙুলের ছাপ রেকর্ড। এ ছাড়া পরীক্ষার্থীদের সঙ্গে থাকা মোবাইল, পেজার, ব্লুটুথ চিহ্নিত করার জন্য প্রযুক্তিগত ব্যবস্থা রয়েছে। ১৪৬০টি পরীক্ষা কেন্দ্রের কোথায় কী হচ্ছে, পর্ষদের কন্ট্রোল রুমে বসে দেখা যাচ্ছে।’’ এই নিয়ে বিরোধীরা অভিযোগ করলেও পড়ুয়ারা করেনি। বিরোধীদের দাবি, আগের টেট নিয়ে দুর্নীতির কারণেই এত ব্যবস্থা। 

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Adblock Detected

Please Turn Off Your Ad Blocker.