খুবই অভিনব ভাবনা। দুয়ারী বিরিয়ানি পরিষেবা, প্রত্যন্ত গ্রামে তাও নাকি আবার কম দামে! রোজ বিকেল পাঁচটা বাজতে না বাজতেই হাওড়া শ্যামনগর এলাকায় বাইকের পিছনের লাল কাপড়ে মোড়া বিরিয়ানি পড়তে হাঁড়ি নিয়ে 35 বছরের একজন ভদ্রলোক ঘুরে বেড়াচ্ছেন যাকে সবাই বিরিয়ানি কাকু বলেই চেনেন।
প্রায় দু বছর ধরে এই ভদ্রলোক দুয়ারে দুয়ারে বিরিয়ানি নিয়ে হাজির হয়ে যাচ্ছেন।কয়েক মাস আগে পর্যন্ত শ্যামপুরের মানুষ যা ভাবতে পারেননি, শহর বা শহরতলির মতো তাঁরাও দুয়ারে বসে বিরিয়ানি পাবেন। এই সম্পূর্ণটাই যেন গল্পের মত, ঘরে বসে বিরিয়ানি পাওয়া যাচ্ছে তাও আবার কম দামে। ৬০ টাকায় পাওয়া যাচ্ছে এক প্লেট বিরিয়ানি। দাম কম হলেও পরিমানে কিন্তু কম নয় একদমই। প্রায় ১০০ গ্রাম চালের ভাত ৭০ থেকে ৮০ গ্রামের এক টুকরো মাংস একটি আলু এবং একটি গোটা ডিম পাওয়া যায়।
ব্রাহ্মণ পরিবারের বিধান চক্রবর্তী, দীর্ঘ দিন পুজো করেই সংসার চলেছে তার, মনে ব্যবসা করার স্বপ্ন ছিল। রাজস্থানে গিয়েছিলেন পূজোর সূত্রে সেখান থেকেই তিনি দেখেছিলেন ফুটপাতে বিরিয়ানির বেশ চাহিদা। সেই বিরিয়ানি তিনি নিজেও টেস্ট করে দেখেছিলেন বিরিয়ানিটি খেতেও যেমন সুস্বাদু তেমনি দামও কম। তাতেই ফুটপাতের দিব্যি বিক্রি হচ্ছে বিরিয়ানি। তখনই বিধান বাবু চিন্তা করে নিয়েছিলেন এই ব্যবসায়ী যদি শুরু করা যায় তবে মন্দ হয় না।
সত্যি সেই ভাবে পরিকল্পনা করে বিধান বাবু ২০২০ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে তার দেশের বাড়িরথেকে অর্থাৎ হাওড়া শ্যামপুর গাদিয়াড়া থেকে তিনি দুয়ারে বিরিয়ানি নিয়ে বেরিয়ে পড়েন। প্রথম থেকে সেই ভাবে সাড়া মেলেনি, তবে দু’বছর ধরে এই ব্যবসার চাহিদা দারুন ভাবে বেড়েছে। প্রতিদিন প্রায় 40 থেকে 50 টা প্যাকেট বিক্রির চাহিদা থাকে। সকাল থেকে বিরিয়ানি প্রস্তুতি চলে তারপর আসে একে একে অর্ডার তার ফোনে। তারপর আর কি বিকেল পাঁচটা বাজতেই সেই লাল কাপড়ের মোড়া বিরিয়ানির হাড়ি নিয়ে বেরিয়ে পড়েন।