সুপ্রিম কোর্টও ফিরিয়ে দিল মানিক ভট্টাচার্যকে। বৃহস্পতিবার শীর্ষ আদালত তাঁর আবেদন খারিজ করে দেয়। আপাতত ইডি হেফাজতেই থাকতে হবে প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের প্রাক্তন সভাপতি মানিককে। সুপ্রিম কোর্টের দুই বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ এই রায় ঘোষণা করেছে।
প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় অভিযুক্ত মানিককে আর্থিক তছরূপের অভিযোগে গ্রেফতার করে এফোর্সমেন্ট ডিরেক্টর (ইডি)। সেই গ্রেফতারির সিদ্ধান্তকে চ্যালেঞ্জ জানিয়েই সুপ্রিম কোর্টে গিয়েছিলেন মানিকবাবু। এদিন তাঁর সেই আবেদন খারিজ করে দিল দেশের সর্বোচ্চ আদালত।
ইডির গ্রেফতারিকে চ্যালেঞ্জ করে মানিক সুপ্রিম কোর্টে যুক্তি দিয়েছিলেন, তাঁকে সিবিআইয়ের গ্রেফতারি থেকে রক্ষাকবচ দিয়েছিল শীর্ষ আদালত। তার পরও আর্থিক তছরুপের অভিযোগে ইডি তাঁকে গ্রেফতার করেছে। মঙ্গলবার মানিকের এই আবেদনের শুনানি হয় সুপ্রিম কোর্টে। তবে সেদিন শুনানি হলেও রায় দান হয়নি।
বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ১০টায় মামলাটির রায় দেয় সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি অনিরুদ্ধ বসু এবং বিচারপতি বিক্রম নাথের ডিভিশন বেঞ্চ। তাতেই তাঁরা জানিয়ে দেন, এই তৃণমূল নেতাকে ইডির গ্রেফতারিতে কোনও ভুল নেই। এই প্রেক্ষিতে গত সোমবারই আদালতে ২৪ পাতার হলফনামা জমা দিয়েছিলেন ইডির আইনজীবী। ওই হলফনামায় মানিককে গ্রেফতারির নেপথ্যে থাকা পাঁচটি কারণও জানিয়েছিল তদন্তকারী সংস্থা।
প্রথমত, শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতি কান্ডে গ্রেফতার হওয়া পার্থ চট্টোপাধ্যায় ও অর্পিতা মুখোপাধ্যায়ের নাম জড়িয়েছে। অভিনেত্রীর ফ্ল্যাট থেকে কোটি কোটি টাকা উদ্ধার হয়েছে। ওই অর্থের সঙ্গে প্রাথমিক নিয়োগ মামলাও জড়িত থাকতে পারে। সেক্ষেত্রে মানিকও জড়িত থাকতে পারেন বলে মনে করছেন তাঁরা।
দ্বিতীয়ত, মানিকের নামে প্রচুর বেনামী সম্পত্তির হদিস পাওয়া গিয়েছে। তাঁর ছেলে শৌভিক ভট্টাচার্যের নামেও বিপুল সম্পত্তি রয়েছে। মানিকের বিরুদ্ধে আর্থিক তছরুপের অভিযোগের তদন্তও চলছে। তাই তাঁকে গ্রেফতার করা জরুরি ছিল। এমনটাই দাবি ইডির।
তৃতীয়ত, নিয়োগ দুর্নীতির তদন্তে জানা গিয়েছে, মানিক টাকা নিয়ে চাকরি দিয়েছেন। তারও তদন্ত জরুরি। চতুর্থত, মানিককে দেওয়া অন্তর্বর্তী রক্ষাকবচের প্রসঙ্গে টেনেও ইডির আইনজীবী বলেন, রক্ষকবচের শর্ত ছিল মানিককে তদন্তে সহযোগিতা করতে হবে। কিন্তু তৃণমূল বিধায়ক তা করেননি।
পঞ্চমত, সুপ্রিম kor মূলত সিবিআইয়ের মামলায় মানিককে রক্ষাকবচ দিয়েছিল। ইডি তাঁর বিরুদ্ধে পদক্ষেপ করবে না, এমন কোথাও বলা হয়নি। মানিকের বিরুদ্ধে ফৌজদারি অপরাধের তদন্ত করছে সিবিআই। আর ইডি তদন্ত করছে আর্থিক তছরুপের ভিত্তিতে। দু’টি তদন্তকারী সংস্থার তদন্ত প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ আলাদা। সেক্ষেত্রে সিবিআই মামলার রক্ষাকবচ ইডির মামলায় কার্যকর হওয়ারও কথা নয়।