বৃহস্পতিবার সল্টলেকে ২০১৪ টেট উত্তীর্ণ চাকরিপ্রার্থীদের বিক্ষোভ এক আলাদা রূপ নিয়েছিল। সেই আন্দোলন ভাঙতে তৎপর ছিল বিরোধীরা। অবশেষে মধ্যরাতে সল্টলেকের করুণাময়ী থেকে আন্দোলনকারীদের তুলে দেয় পুলিশ। এরপর এই পুলিশি অভিযান নিয়ে বিরোধীরা নানান বক্তব্য করেন। অবশেষে এদিন এই প্রেক্ষিতে তৃণমূল সাংসদ শান্তনু সেন প্রতিক্রিয়া দিলেন।
শান্তনু সেন বলেন, গণতন্ত্রের একটি অন্যতম স্তম্ভ, জুডিশিয়ারি। এই জুডিশিয়ারি নির্দেশ মানা কি অন্যায় ? নাকি আইন মেনে ব্যবস্থা নেওয়াটা অন্যায় ? যা আন্দোলন করছেন, তাঁদের প্রতি পূর্ণ সংবেদনশীলতার সঙ্গেই বলছি, আইন তো কখনও হাতে নিয়ে নেওয়া যায় না। আমরা তো বারংবার দেখেছি পুলিশ কীভাবে অনুরোধ করেছেন তাঁদেরকে, যে এখানে ১৪৪ জোন করা আছে। এখানে অনুগ্রহ করে আপনারা বসবেন না। আসলে সমস্যাটা তো অন্য জায়গায়। মুখ্যমন্ত্রী যখন সমাধান করার চেষ্টা করছেন, তখন বিরোধীরা তাঁদের মাংসওয়ালা, ঘুগনিওয়ালা ক্যাডারদের চাকরি প্রার্থী হিসেবে পাঠিয়ে দিচ্ছে।’
এদিন রাতে সময় যত এগোচ্ছিল, ততই পুলিশের ভিড় তত বাড়ছিল করুণাময়ীতে। একে একে সেখানে প্রিজন ভ্যানও এসে পৌঁছয়। এর পর শুরু হয় মাইকিং। বলা হয়, দুই মিনিটের মধ্যে আন্দোলনকারীদের জমায়েত সরাতে হবে। তার মধ্যে না উঠলে, উঠিয়ে দেওয়া হবে। সেই মতোই মধ্যরাতে চাকরিপ্রার্থীদের হাত ধরে টেনে তুলে দেয় পুলিশ।
যার কারণে দুই পক্ষের মধ্যে ধস্তাধস্তি বেধে যায়। বেশ কয়েক জন চোট পান বলেও অভিযোগ। আন্দোলনকারীদের তিনটি প্রিজন ভ্যানে তোলা হয়। এছাড়া অসুস্থ এক আন্দোলনকারীকে তোলা হয় অ্যাম্বুলেন্সে। এরপরই আন্দোলকারীদের মধ্যে একজনের অভিযোগ, ‘আমরা কি চোর?’, ‘শান্তিপূর্ণ আন্দোলন করার মাঝে রাতের অন্ধকারে পুলিশ কেন তুলে দিল?’।
এমনকি মুখ্যমন্ত্রী একজন মহিলা হওয়া সত্বেও কীভাবে রাতের অন্ধকারে মহিলা চাকরিপ্রার্থীদের এভাবে জোর করে তুলে দেওয়া হয়, অনেকে সেই প্রশ্নও তুলেছেন। কেউ কেউ রাজ্য সরকারকে তীব্র ব্যঙ্গের সুরে বলেন, ‘আমাদের ন্যায্য চাকরি ঘুষের টাকায় বিক্রি করে দিয়ে পুলিশ দিয়ে জোর করে মধ্যরাতে তুলে দিচ্ছে আমাদের।’
এসবের মধ্যেই এদিন উত্তরবঙ্গ থেকে ফেরার পর টেট উত্তীর্ণদের আন্দোলন প্রসঙ্গে মুখ্যমন্ত্রীকে প্রশ্ন করা হলে, তিনি বিশেষ কিছু না বলেননি। মমতা শুধু বলেন, ‘আমি বললাম না, আমি এসব নিয়ে কিছু বলব না। আমি বললাম, যা বলার ব্রাত্য বলবে। কারণ, আমি তো জানি না ডিটেলস্।’