শরৎ আসতে একটু দেরী। তাই শরতের মেঘ আকাশ জুড়ে দেখা যাচ্ছে না। তার বদলে ইলশেগুঁড়ি বৃষ্টি হচ্ছে সারাদিন ধরে। যদিও এটা নিম্নচাপের বৃষ্টি। আর এই বৃষ্টির সময় বাঙালির প্রিয় খাবার কিন্তু খিচুড়ি আর ইলিশ মাছ ভাজা। বাঙালির সঙ্গে ইলিশের যোগসূত্র কিন্তু সুদূরপ্রসারী। এ বাংলা থেকে ও বাংলা পর্যন্ত বিস্তৃত। তবে পুজোর আগেই বাঙালীদের মন খুশ করে দিল বাংলাদেশের পদ্মার সুস্বাদু ইলিশ।
শারদোৎসব উপলক্ষ্যে হাওড়ার পাইকারি মাছ বাজারেও এলো বাংলাদেশের পদ্মার সুস্বাদু ইলিশ। বিক্রি হচ্ছে ১২০০ টাকা দরে। মঙ্গলবার সকাল থেকেই সেই ইলিশ মাছ কিনতে ভিড় জমিয়েছেন খুচরো ব্যবসায়ীরা। মোট সাড়ে ৮ মেট্রিক টন মাছ এসেছে বাজারে। রাজ্যের ইলিশ আমদানিকারী সংস্থা ফিস ইমপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন সূত্রের খবর, পুজোর আগে পদ্মার ইলিশ ওপার বাংলা থেকে এপার বাংলায় এসেছে। এই ভালো লাগার আনন্দের কোনও সীমা নেই। এপার বাংলার মানুষ ওপারের পদ্মার ইলিশের জন্য ভীষণই উদগ্রীব।
ইলিশ মাছ শুনলেই জিভে জল চলে আসে। আর পুজোর আগে ইলিশ চলে আসা মানে বাঙালির পুজো জমে যাওয়া। ভাজা, ঝোল, ভাপা, সর্ষে যেভাবেই খান না কেন মন যেন ভরবে না। আর তা যদি হয় পদ্মার ইলিশ তবে তো সোনায় সোহাগা। তবে দামটা যে একটু নাগালের বাইরে তা আর বলতে হবে না। কিন্তু একদিন পকেট ফাঁকা করে মাছের রানীকে বাড়িতে আনাই যায়। এশিয়ার সবথেকে বড় স্থলবন্দর পেট্রাপোলের কাস্টমস ক্লিয়ারিং এজেন্ট ফিরোজ মণ্ডল জানিয়েছেন যে ২৪৫০ টনের কাছাকাছি ইলিশ ঢোকার কথা রয়েছে এ রাজ্যে। ২০১২ সালে বাংলাদেশ সরকার ইলিশ রফতানির উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেছিল। এরপর থেকে কলকাতার বাজারে পদ্মার ইলিশ আসা একপ্রকার বন্ধই ছিল। সমুদ্রের ইলিশ পেলেও পদ্মার ইলিশ সে অর্থে চেখে দেখার সুযোগই মেলেনি বেশ কয়েক বছর। যদিও গত তিন চার বছর ধরে দুর্গাপুজোর আগে ভারতে ইলিশ রফতানিতে ছাড়পত্র দিয়েছে শেখ হাসিনার সরকারের বাণিজ্যমন্ত্রক। এরপরই রবিবার ফিশ ইমপোর্টস অ্যাসোসিয়েশনে সে দেশ থেকে চিঠি আসে।
এ বছরে ২৪৫০ মেট্রিক টন বাংলাদেশের ইলিশ আমদানির অনুমতি মিলেছে। আগামী ৩০ সেপ্টেম্বর মহাপঞ্চমী। তার আগেই সম্পূর্ণ মাছ আমদানি হয়ে যাবে।