অভিযোগ উঠেছে প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনায় অনেক পাকা বাড়ির মালিককেও গৃহহীন দেখানো হয়েছে বলে। ইতিমধ্যেই রাজ্য রাজনীতি উত্তাল সেই অভিযোগ নিয়ে। এরই মধ্যে এই দুর্নীতি নিয়ে বিজেপি নতুন করে কেন্দ্রীয় গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রী গিরিরাজ সিংহের কাছে অভিযোগ জানাল। মঙ্গলবার দিল্লিতে মন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করেন রাজ্য বিজেপির সভাপতি সুকান্ত মজুমদার ও বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। এর পরে সুকান্ত বলেন, ‘‘কী ভাবে তৃণমূলের নির্দেশে দুর্নীতি হয়েছে তা আমরা মন্ত্রীকে জানিয়েছি। সব শুনে তিনি জানিয়েছেন, এই দুর্নীতিতে যুক্ত সরকারি অফিসার, কর্মীদের বিরুদ্ধেও এফআইআর করা হবে।’’
সরগরম বাংলার বিভিন্ন জেলা আবাস যোজনায় বাড়ি নির্মাণে দুর্নীতির অভিযোগ তুলে। শুধু বিজেপি নয় এমনকি একই অভিযোগ তুলেছে সিপিএমও। দাবি দুই দলেরই,আবাস যোজনার তালিকায় প্রকৃত প্রাপকদের নাম নেই। তার বদলে পাকা বাড়ি রয়েছে এমন তৃণমূল নেতা এবং তাঁদের আত্মীয়দের নাম আছে। এ নিয়ে গিরিরাজকে লিখিত ভাবেও কিছু তথ্য সুকান্তরা তুলে দিয়েছেন বলে জানা গিয়েছে। একইসঙ্গে ১০০ দিনের কাজের টাকা নিয়ে মঙ্গলবার গিরিরাজের সঙ্গে আলোচনা হয়।এই প্রসঙ্গে সুকান্ত বলেন, ‘‘আমরা চাই ওই প্রকল্পে যাঁরা কাজ করেছেন তাঁরা যেন প্রাপ্য টাকা পেয়ে যান। কেন্দ্রের কাছে আমাদের দাবি, রাজ্য সরকারের টাকা হিসাব না পাওয়া পর্যন্ত আটকে রাখা হলেও শ্রমিকদের প্রাপ্য দিয়ে দেওয়া হোক।’’একই সঙ্গে আধার সংযোগ হয়নি এমন জব কার্ডের মাধ্যমে কারা কেন্দ্রীয় প্রকল্পের টাকা পেয়েছেন তার তদন্তেরও দাবি জানিয়েছেন।
মঙ্গলবার গিরিরাজের সঙ্গে সাক্ষাতের পাশাপাশি সংসদ ভবনে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের সঙ্গেও দেখা করেন শুভেন্দু। সুকান্ত অবশ্য সেখানে ছিলেন না। শাহ-শুভেন্দু বৈঠকে কী কী বিষয়ে কথা হয়েছে তা জানা না গেলেও বিরোধী দলনেতা টুইট করে জানিয়েছেন, প্রায় ৩০ মিনিট ধরে বাংলার বিভিন্ন বিষয় নিয়ে তিনি কথা বলেছেন। তবে বিজেপি খবর, এই দিন শাহের হাতে একটি পুস্তিকা তুলে দিয়েছেন শুভেন্দু। তাতে তাঁর বিরুদ্ধে রাজ্যের কোথায় কোন মামলা চলছে তার বিবরণ রয়েছে। যদিও শুভেন্দু এই বিষয়ে আনুষ্ঠানিক ভাবে কিছু জানাননি। ওই পুস্তিকা পেয়ে শাহ কী বলেছেন তা-ও জানা যায়নি।
উল্লেখ্য ,শুভেন্দু সোমবারই দিল্লিতে যান। বিজেপি সংসদীয় বৈঠক ছিল রাতে কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী তথা বাঁকুড়ার সাংসদ সুভাষ সরকারের বাড়িতে সর্বভারতীয় সভাপতি জেপি নড্ডার উপস্থিতিতে।ওই বৈঠকে হাজির এক নেতা জানান, শুধু নিজের নয়, বাংলায় বিজেপির অন্যান্য নেতা ও কর্মীদের বিরুদ্ধেও যে সব মামলা চলছে তার লড়াইয়ে কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের সহায়তার দাবি জানান শুভেন্দু। সোমে নড্ডা এবং মঙ্গলে শাহের সঙ্গে বৈঠকের মাঝে মঙ্গলবার সংসদ ভবনে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গেও দেখা হয় শুভেন্দুর। যদিও মোদীর সঙ্গে বৈঠক বা সাক্ষাৎ পূর্বনির্ধারিত ছিল না। এক বিজেপি সাংসদ জানিয়েছেন, হঠাৎই মোদীর মুখোমুখি হয়ে যান শুভেন্দু। তবে কুশল বিনিময় ছাড়া কোনও কথা হয়নি।