নিয়োগ দুর্নীতির তদন্তে তৃণমূল বিধায়ক মানিক ভট্টাচার্যকে একাধিক বার জেরা করেছে ইডি। মানিকের এবং তাঁর ঘনিষ্ঠদের নামে কত জমি কেনা হয়েছে তা জানতে এবার নদিয়া জেলা রেজিস্ট্রি অফিসে পৌঁছে গিয়েছে ইডি তদন্তকারীরা। সেখান থেকে নির্দিষ্ট করে আট জনের নামের তালিকা পাওয়া হয়েছে।
নদিয়া জেলা রেজিস্ট্রি অফিস থেকে যে তালিকা দেওয়া হয়েছে তাতে মানিকের স্ত্রী, পুত্র, কন্যা, পুত্রবধূ ছাড়াও দু’টি বেসরকারি সংস্থার নাম রয়েছে। সূত্রের খবর, এবার মানিকের স্ত্রী শতরূপা, ছেলে সৌভিক, মেয়ে স্বাতী, বৌমা অন্তরা মুখোপাধ্যায়, দাদা পান্নালাল ভট্টাচার্য ছাড়াও দেবব্রত মুখোপাধ্যায় নামে এক জনের নামে ২০১১ সালের পরে কোনও ভূসম্পত্তি কেনা হয়েছে কি না তা জানতে চেয়েছে ইডি।
নদিয়া জেলা রেজিস্ট্রি অফিস সূত্রে খবর, এই সময়কালে মানিকের ছেলে ও মেয়ের নামে জমি কেনা হয়েছে। ইডি-র চিঠিতে দেবব্রত মুখোপাধ্যায় বলে এক জনের নাম থাকলেও বাবার নাম না থাকায় তাঁকে সঠিকভাবে চিহ্নিত করা যায়নি। ২০০৮ থেকে জেলায় ওই নামে যত জমি রেজিস্ট্রি হয়েছে, সব ক’টিরই তথ্য ইডি-কে দেওয়া হয়েছে।
কৃষ্ণনগর রেজিস্ট্রি অফিস সূত্রে খবর, ২০১৪ সালে রাজারামপুর-ঘোড়াইক্ষেত্র মৌজায় মানিকের ছেলে সৌভিকের নামে ৩৪ শতক জমি কেনা হয়। ২০২১ সালে মেয়ে স্বাতী ভট্টাচার্যের নামে স্থানীয় মহুরাপুর গ্রামে ৫৪ শতক আমবাগান কেনা হয়েছে। সেটি বিক্রি করেছেন রত্নারানি সাহা নামে এক জন, যাঁর স্বামী প্রশান্ত সাহা ঘটনাচক্রে গত বছর পাঁচেক যাবৎ পূর্ব বর্ধমানের কাটোয়া পশ্চিম চক্রে অবর বিদ্যালয় পরিদর্শক অফিসে ঠিকাকর্মী।
প্রশান্তের বাবা দাসু সাহা এবিষয়ে জানান, তাঁরা ৭ লক্ষ টাকায় জমি বিক্রি করেছেন। ১ লক্ষ টাকা বর্ধমানে একটি সমবায় ব্যাঙ্কের অ্যাকাউন্টে দেওয়া হয়েছিল, আর বাকি নগদে দেওয়া হয়। ফোনে প্রশান্ত অবশ্য দাবি করেন, সাড়ে পাঁচ লক্ষ টাকায় জমিটি বিক্রি হয়েছে। মানিককে ফোন করা হলে পরে কথা বলবেন জানিয়ে কেটে দেন।
এরপর আর ফোন ধরেননি পলাশিপাড়ার তৃণমূল বিধায়ক। এমনকি এসএমএস বা হোয়াটসঅ্যাপ বার্তার উত্তরও দেননি। সৌভিকের ফোন বন্ধ ছিল। তবে মানিকের দাদা পান্নালাল দাবি করেন, “ন্যায্য দামেই জমি কেনা হয়েছে। সেটি ঘোড়াইক্ষেত্র প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রের জন্য দান করা হবে।”