টেট পাশ না করেই স্কুলে চাকরি পেয়েছেন, এই অভিযোগে হাই কোর্টে অনুব্রত কন্যার বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়। এই মর্মে বৃহস্পতিবার সুকন্যা মন্ডলকে ডেকে পাঠায় কলকাতা কোর্ট। তবে মামলায় নথি গ্রাহ্য না হওয়ায় হাই কোর্টের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় নির্দেশ প্রত্যাহার করে নিয়েছেন। এই পুরো ঘটনায় সুকন্যা যে হেনস্থা হয়েছেন তা স্বীকার করেছেন বিকাশ ভট্টাচার্য্য।
টেট দুর্নীতি মামলায় সুকন্যা সহ অনুব্রত ঘনিষ্ট মোট ছয় জনের নাম জড়িয়েছে। বৃহস্পতিবার বিচারের শুরুতে বিচারপতি জানিয়ে দেন ওই অতিরিক্ত হলফনামা প্রাথমিকে নিয়োগ সংক্রান্ত মামলায় গ্রহণ করা যাবে না। এর প্রেক্ষিতে সিপিএম নেতা বিকাশ ভট্টাচার্য্য বলেছেন, ভবিষ্যতে আরও নথিপত্র জোগাড় করে পুনরায় মামলা করা হবে সুকন্যার বিরুদ্ধে।
এই পুরো ঘটনায় অনুব্রত কন্যাকে যে হেনস্থা হতে হয়েছে সে বিষয়ে তৃণমূলের মুখপাত্র কুণাল ঘোষ বলেন, ‘‘আদালত ও আইনের প্রতি পূর্ণ সম্মান জানিয়ে বলছি, যে হলফনামা এতটা গুরুত্বপূর্ণ ছিল, যার ভিত্তিতে তাঁদের (সুকন্যা-সহ ছ’জনকে) হাজিরা নিশ্চিত করতে পুলিশ সুপারকে নির্দেশ দেওয়া হল, পরের শুনানিতে তা এতটা গুরুত্বহীন হয়ে গেল! নির্দেশই প্রত্যাহার করে নেওয়া হল! যাঁদের সম্পর্কে এই নির্দেশ দেওয়া হল, তাঁরা আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগও পেলেন না। যদি সামাজিক ভাবে অপদস্থ করার পরিস্থিতি তৈরি করা হয়, তা অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক।’’
বৃহস্পতিবার আদালতে ঢোকার সময় সুকন্যা ‘গরু চোরের মেয়ে’ ধ্বনিও শুনতে হয়। এপ্রসঙ্গে আইনজীবী বিকাশ বলেন, ‘‘ওঁকে (সুকন্যাকে) যে ভাবে হেনস্থা হতে হল, তা দুর্ভাগ্যজনক। হেনস্থা হতে হয়েছে প্রকৃতপক্ষে ওঁর বাবার ক্রিয়াকর্মের জন্য। কিন্তু যাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ, এই ঘটনায় তিনি কেন অপমানিত হবেন? তিনি তো মাথা উঁচু করে বলবেন, আমার বিরুদ্ধে অভিযোগ ভুল।’’ তাঁর সংযোজন, ‘‘আসলে দুর্নীতিতে হাত পড়লে স্বার্থে আঘাত লাগে। তখন এ রকম অনেকেরই মনে হয়।’’
এই ঘটনায় জনসাধারণের উদ্দেশ্যে বিকাশের আবেদন, ‘‘যিনি অপরাধ করেছেন, তাঁর বিরুদ্ধে বলুন। কিন্তু তাঁর পরিবার সম্পর্কে কেউ কোনও মন্তব্য করবেন না। এটা অসুস্থতার লক্ষণ। আপনারা প্রচারের আবহে মানসিক দিক থেকে অসুস্থ হয়ে পড়বেন না। প্রত্যেক মানুষকে প্রাপ্য মর্যাদা দিয়ে সম্মানজনক আচরণ করুন। তিনি যদি ভুল করে থাকেন, তাঁর ভুলের সমালোচনা করুন। কিন্তু সেটা ব্যক্তি পর্যায়ে নিয়ে যাবেন না।’’