Advertisement
রাজনীতিরাজ্য

কেষ্ট কি অন্যের জেতা টিকিট কিনে কালো টাকা সাদা করার চেষ্টা করেছিলেন? তদন্তে সিবিআই

অনুব্রত মণ্ডল কী ভাবে লটারিতে এক কোটি টাকা পুরস্কার জিতলেন? এই প্রশ্নের জবাব খুঁজতে এ দিন আসানসোল সংশোধনাগারে গিয়েছিল সিবিআই। তদন্তকারীরা টানা এক ঘণ্টা কুড়ি মিনিট অনুব্রতকে জেরাও করেন। কিন্তু তাঁরা স্পষ্ট কোনো উত্তর পাননি। সিবিআই সূত্রে দাবি, কেষ্ট অন্যের জেতা টিকিট কিনে কালো টাকা সাদা করার চেষ্টা করেছিলেন কি না, সেটাই তাঁরা এখন খতিয়ে দেখতে চান। সেই টাকার সঙ্গে গরু পাচারের যোগ আছে কি না, সেটাও তাঁদের তদন্তসাপেক্ষ।

লটারিতে এক কোটি টাকা পুরস্কার জেতার বিষয়ে অনুব্রত মণ্ডলকে বিভিন্ন প্রশ্ন করা হয়। কবে তিনি টিকিট কিনেছিলেন, পুরস্কারের কথা কী ভাবে জানতে পারেন, কী ভাবে টাকা পেয়েছেন, কেউ তাঁকে টাকা পৌঁছে দিয়েছে, না কি তিনি নিজে টাকা সংগ্রহ করেছেন, তা করলে কোথা থেকে সংগ্রহ করেছেন—এমন নানা প্রশ্ন করা হয় বীরভূম জেলা তৃণমূল সভাপতিকে। সিবিআইয়ের দাবি, এসব প্রশ্নের মুখে অধিকাংশ সময়ে একেবারে চুপ ছিলেন অনুব্রত। তবে তাঁর শারীরিক অবস্থার কথা জানতে চাওয়া হলে, অনুব্রত তাঁদের কাছে জানান, তিনি ভাল নেই।

তবে হঠাৎ কেন এই লটারি জয়ের উপরে জোর দিচ্ছে সিবিআই? তদন্তকারী সংস্থা সূত্রে বলা হচ্ছে, বহু দিন ধরেই জেলায় লটারির মাধ্যমে কালো টাকা সাদা করার অভিযোগ উঠছে। লটারি ব্যবসার সঙ্গে যুক্তদের অনেকেই এ কথা স্বীকার করে নিয়েছে। লটারি কেনা ও পুরস্কার পাওয়ার প্রক্রিয়ার মধ্যে নানা ফাঁকের সুযোগ নিয়েই তা করা হয়।

লটারি ব্যবসায়ীদের সূত্রে খবর, এক কোটি পুরস্কার জিতলে কর ও অন্য খরচ বাদে ৬৮-৬৯ লক্ষ টাকা পেতে পারেন বিজেতা। অভিযোগ, অনেক ক্ষেত্রেই গরিব বিজেতাকে ৮০-৯০ লাখ টাকা দিয়ে সেই টিকিট ‘কিনে নেন’ প্রভাবশালীরা। অনুব্রতের লটারি প্রাপ্তির ক্ষেত্রেও এমন কিছু হয়েছিল কি না, তা খতিয়ে দেখছেন তদন্তকারীরা।

তৃণমূল নেতা বা তাঁদের ঘনিষ্ঠরা লটারির প্রথম পুরস্কার জিতছেন কী ভাবে—এই প্রশ্ন তুলেছেন বিরোধীরা। এ বিষয়ে বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার বলেন, ‘‘অনুব্রত মণ্ডল থেকে শুরু করে তৃণমূল নেতারা বারবার ওই লটারি পাচ্ছেন। আমি বলেছিলাম, ওঁরা বলে দিন, কোন জ্যোতিষীকে দেখান। আমরাও যাব, ওই লটারি কাটব। আসলে, ডাল মে কুছ কালা হ্যায়।’’

অনুব্রত মণ্ডলের বিরুদ্ধে লটারি নিয়ে এ ভাবে অভিযোগ তুলে তাঁর ‘চরিত্রহনন’ করা হচ্ছে বলে এ দিন বীরভূমে এসে পাল্টা অভিযোগ তোলেন রাজ্যের পুরমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম। বিষ্ণুপুরের সভা থেকে তিনি বলেন, ‘‘বলছে লটারি পেল কেন? আরে ভাই লটারি পেল কেন, তোমায় খোঁজ নিতে হবে না! ভগবানকে বলো, আমার ভাগ্যটাকে কী করে করলে? আসলে, অনুব্রতের চরিত্রহনন করা হচ্ছে এই ভাবে!’’

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Adblock Detected

Please Turn Off Your Ad Blocker.