সঙ্ঘ পরিবার ভারতে একাধিকবার জন্মনিয়ন্ত্রণ আইন চালু করার দাবি করেছে। কিন্তু এদেশে জনসংখ্যার বৃদ্ধির হারের সূচক নিম্নমুখী। সেকারণে এই আইন প্রণয়নের রাজি নয় বিজেপি সরকার। এবার প্রয়াগরাজে সঙ্ঘপ্রধান মোহন ভাগবতের সঙ্গে দেখা করলেন উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগি আদিত্যনাথ।
সূত্রের খবর, যোগি ও মোহন ভাগবতের মধ্যে মূলত জন্মনিয়ন্ত্রণ আইন নিয়েই আলোচনা হয়েছে। আগামী ২৩ অক্টোবর উত্তর ভারতে ‘ছোটি দিওয়ালি’র দিন আরএসএস (RSS) প্রধানকে অযোধ্যায় আসার জন্য আমন্ত্রণও জানান মুখ্যমন্ত্রী। ওই দিন সম্ভবত অযোধ্যায় উপস্থিত থাকবেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি।
এবারের বিজয়া দশমীর মঞ্চ থেকে জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণ আইন আনার পক্ষে জোরালো দাবি করেন সঙ্ঘপ্রধান মোহন ভাগবত। সাধারণত বিজয়া দশমীতে আরএসএস প্রধান যে ভাষণ দেন, আগামী এক বছর সেটিকেই সামনে রেখে সঙ্ঘ পরিবার আন্দোলন চালায়। এই সপ্তাহে উত্তরপ্রদেশের প্রয়াগরাজে হওয়া সঙ্ঘ পরিবারের কার্যসমিতির সভাতেও জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণ, জোর করে ধর্মান্তরণের বিষয় নিয়ে আলোচনা করা হয়।
এবিষয়ে সঙ্ঘের সাধারণ সম্পাদক দত্তাত্রেয় হোসাবলে জানান, ‘গোটা দেশে ধর্মভিত্তিক জনসংখ্যার যে অসাম্য লক্ষ্য করা যাচ্ছে, তার প্রধান কারণ বাংলাদেশ থেকে অনুপ্রবেশ ও ধর্মান্তরণ। সেই কারণেই একটি সুসংহত জননিয়ন্ত্রণ নীতি চাই। হোসাবলে এদিন আরও বলেন, ‘বাংলাদেশ থেকে মুসলিমদের অনুপ্রবেশের ফলে উত্তর বিহারের কাটিহার, পূর্ণিয়ার মতো জেলাগুলিতে জনসংখ্যার ভারসাম্য নষ্ট হয়ে গিয়েছে।’
জানা গিয়েছে, যোগির সঙ্গে বৈঠকে জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণ প্রশ্নে দীর্ঘ আলোচনা করেন ভগবত। যে ভাবে সঙ্ঘ পরিবার জন্মনিয়ন্ত্রণ আইন প্রণয়নের প্রশ্নে সরব হচ্ছে তাতে আগামী দিনে মোদি সরকারের উপর ওই আইন প্রণয়নে চাপ বাড়তে চলেছে বলেই মনে করছে রাজনৈতিক মহল।
বিজেপি সরকারের দাবি, ২০২৫ সালে দেশে জাতীয় গর্ভধারণের যে হার সরকার নির্দিষ্ট করেছিল, তা সময়ের আগেই পূরণ করা সম্ভব। তাই আইন করে জন্মনিয়ন্ত্রণ করার কোনও লক্ষ্য আপাতত কেন্দ্রীয় সরকারের নেই। এই বিষয়ে সঙ্ঘ পাল্টা দাবি করে, জন্মহার যা কমেছে, তা মূলত কমেছে হিন্দু সমাজেই। মুসলিম সমাজে জন্মহার কমার হার হিন্দুদের তুলনায় নগণ্য। এরকম চলতে থাকলে একসময় দেশে সংখ্যাগুরু হয়ে দাঁড়াবে মুসলিমেরা। একারণেই জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণ বিল অত্যন্ত জরুরি।