Advertisement
রাজনীতিরাজ্য

টাকার ভাগ বাঁটোয়ারা নিয়ে বিবাদ ছিল পার্থ-মানিকের, দাবি ইডির

‘এত চাকরি হচ্ছে। কিন্তু টাকা কোথায়?’, প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় এই প্রশ্নই করেছিলেন তৎকালীন প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের সভাপতি মানিক ভট্টাচার্যকে। এক সময়ে মানিককে ডেকে রীতিমতো ধমকেছিলেন পার্থ চট্টোপাধ্যায়। টাকার ভাগ বাঁটোয়ারা নিয়ে দুই তৃণমূল নেতার মধ্যে যে সম্পর্ক ভালো ছিল না বলেই দাবি ইডির।

পার্থ হেফাজতে থাকাকালীন গত ২৮শে জুলাই দু’জনকে মুখোমুখি বসিয়ে প্রশ্ন করা হয়। সেখানে টাকার ভাগ-বাঁটোয়ারা নিয়ে ওই ঝগড়ার প্রসঙ্গ তোলা হলে, বিষয়টি এড়িয়ে গিয়েছেন দু’জনেই। তাঁদের সামনে সেই সংক্রান্ত তথ্য-প্রমাণ তুলে ধরার পরেও মুখ খোলেননি। কিন্তু আলাদা-আলাদা ভাবে জিজ্ঞাসাবাদের সময়ে বিষয়টি কেউই অস্বীকার করেননি বলেই দাবি তদন্তকারী আধিকারিকদের।

পার্থ ও মানিকের মোবাইলের তথ্য ঘেঁটে, এমনকি ফোন থেকে মুছে ফেলা তথ্য পুনরুদ্ধার করে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে ইডি সূত্রে দাবি, মানিক ও পার্থের মধ্যে বিশ্বাসে চিড় ধরেছিল। তা নিয়ে বাদানুবাদও হয়েছে দুজনের মধ্যে। অভিযোগ, গণ্ডগোল বেঁধেছিল মূলত টাকার ভাগ বাঁটোয়ারা নিয়ে।

এক তদন্তকারী অফিসারের দাবি, এক সময়ে পার্থের মনে হয়েছিল, তাঁকে না জানিয়েই, টাকা সরাচ্ছেন মানিক। অন্য ‘সোর্স’ থেকে সে রকম কিছু তথ্যও নাকি পার্থের কাছে আসতে শুরু করেছিল। এমনকি প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রীর মোবাইলে এসেছিল মেসেজ: ‘মানিক যা তা ভাবে টাকা তুলছে’।

ইডি সূত্রে দাবি, সতর্ক করার পরেও বড় অঙ্কের টাকার হিসাব না পেয়ে চটে গিয়েছিলেন প্রাক্তন শিক্ষা মন্ত্রী। তার পরে এক বার বাড়িতে, এক বার বিধানসভায় নিজের দফতরে ডেকে নাকি মানিককে ধমকও দিয়েছেন পার্থ। এক তদন্তকারী অফিসারের ব্যাখ্যা, ‘‘পার্থের হিসাবের বাইরে টাকা তুলছিলেন মানিক। শিক্ষামন্ত্রীর নজর এড়িয়ে নিজস্ব মিডলম্যান মারফত মানিক চাকরি বিক্রি করছেন জানতে পেরেই কৌশলে ওই মেসেজ ফরোয়ার্ড করেছিলেন পার্থ।’’

ইডি-র এক পদস্থ কর্তার কথায়, ‘‘পার্থ ও মানিকের ঝগড়া তদন্তের অঙ্গ নয়। কিন্তু তার সূত্র ধরে মানিক কী ভাবে চাকরি বিক্রি করেছিলেন, তার টাকা কাদের মারফত কোথায় এবং কী ভাবে জমা পড়েছিল, আমরা শুধু সেটা জানার চেষ্টা করছি।’’

এক তদন্তকারী আধিকারিকের দাবি, ‘‘সাধারণত ৭ থেকে ১০ লক্ষ টাকায় প্রাথমিকে অযোগ্য প্রার্থীদের চাকরি দেওয়া হত বলে প্রাথমিক ভাবে জানা গিয়েছে। কিন্তু মানিক তাঁর বিভিন্ন মিডলম্যান মারফত আরও বেশি টাকাতেও কিছু ক্ষেত্রে চাকরি বিক্রি করতেন বলে তদন্তে উঠে এসেছে। ওই বাড়তি টাকা বিভিন্ন বেসরকারি বিএড কলেজ এবং স্থাবর-অস্থাবর সম্পত্তিতে ঢালা হয়েছে বলে নির্দিষ্ট তথ্য-প্রমাণ হাতে এসেছে।’’

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Adblock Detected

Please Turn Off Your Ad Blocker.