ভারত সফরে আসছেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আগামী ৫ ই সেপ্টেম্বর রাজধানী দিল্লিতে পৌঁছবেন তিনি। এই সফরে দিল্লিতে বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে বাংলাদেশ প্রধানমন্ত্রীর একান্তভাবে সাক্ষাৎ হোক, এমনটাই চাইছে ঢাকা। তবে এর আগেই বাংলার মুখ্যমন্ত্রীকে চিঠি লিখেছেন হাসিনা।
শেখ হাসিনা মমতাকে চিঠি লিখে জানিয়েছিলেন, তিনি ভারতে আসছেন এবং তিনি আশা করেন সেই সফরে তাঁর সঙ্গে মুখ্যমন্ত্রীর দেখা হবে। পদ্মা সেতু নির্মাণ প্রসঙ্গে হাসিনা বাংলার মুখ্যমন্ত্রীর প্রশংসাবাক্যের জন্য মমতাকে ধন্যবাদও জানিয়েছিলেন তাঁর চিঠিতে। ওই চিঠিতে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী লেখেন, ‘আপনার সৌহার্দ্য এবং অভিনিবেশ আমায় মুগ্ধ করেছে। বাংলাদেশের মানুষ পশ্চিমবঙ্গের মানুষের সঙ্গে একাত্ম বোধ করে।’
বিদেশ মন্ত্রক সূত্রে খবর, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে এখনও পর্যন্ত সরকারি ভাবে দিল্লিতে আমন্ত্রণ জানানো হয়নি। কিন্তু রাজনৈতিক স্তরে কোনও যোগাযোগ হয়েছে কি না, তা সরকারি কর্তারা স্পষ্টভাবে বলতে পারছেন না। রাজনৈতিক সূত্রের বক্তব্য, সব মিলিয়ে হাসিনার ভারত সফরের সময়ে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রীর দিল্লি আসার সম্ভাবনা একেবারেই উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না।
হাসিনার ভারত সফরে আসার আগে বুধবার থেকেই নয়াদিল্লিতে শুরু হয়েছে যুগ্ম নদী কমিশনের বৈঠক।
ভারত এবং বাংলাদেশের মধ্যে বয়ে গিয়েছে ৫৪ টি নদী। কূটনৈতিক সূত্রের দাবি, ৬টি নদীর জলবণ্টন এবং বিভিন্ন দিক নিয়ে ইতিবাচক আলোচনা হয়েছে। কিন্তু তিস্তা নিয়ে কোনও অগ্রগতি এই বৈঠকে হয়নি বলে মনে করা হচ্ছে।
বাংলাদেশের এক কর্তার বক্তব্য, “এত বছর বন্ধ থাকার পরে আবার যে আলোচনা শুরু হল, সেটাই আপাতত সব চেয়ে বড় পাওনা। কূটনীতিতে মতপার্থক্য থাকতেই পারে। কিন্তু আলোচনা চালিয়ে যাওয়া জরুরি। তিস্তা নিয়ে ভারত সরকারের সীমাবদ্ধতা আমরা বুঝি। তবে আজ না হোক কাল, তিস্তা চুক্তির রূপায়ণ হবেই।”
সূত্রের খবর, এই কমিশনের বৈঠকে তিস্তা না হলেও কুশিয়ারা নদীর জলবণ্টন নিয়ে সমঝোতা পত্র চূড়ান্ত হয়েছে। হাসিনার সফরে এই চুক্তিপত্র সই হওয়ার কথা। ভারত-বাংলাদেশ গঙ্গা চুক্তির মেয়াদও শেষ হওয়ার মুখে। সেটি নিয়েও আলোচনা হয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে।
ঢাকার এক শীর্ষ সূত্রের বক্তব্য, “দক্ষিণ এশিয়ার পরিবর্তিত ভূকৌশল এবং ভূ-অর্থনীতির সাপেক্ষে ভারত নতুন কিছু পদক্ষেপ করুক যাতে বাংলাদেশ শক্তিশালী হয়। ভারতকে অবশ্যই তাদের নিজেদের অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি বজায় রাখা এবং বাংলাদেশের অর্থনৈতিক বৃদ্ধিকে স্বীকৃতি দেওয়া— এই দুইয়ের মাঝে সূক্ষ্ম ভারসাম্য তৈরি করতে হবে।”