Advertisement
বিদেশ

ফাঁসির মুখে ইরানের ফুটবলার, সরকার-বিরোধী প্রতিবাদে শামিল হওয়ার মাশুল

বিশ্বকাপ চলাকালীন ইরানি মহিলাদের ওপর অত্যাচারের প্রতিবাদ করেছিলেন সেই দেশের ফুটবলাররা। তারা প্রথম ম্যাচে তাদের জাতীয় সংগীতের সঙ্গে গলা মেলান নি। এবার জানা যাচ্ছে সেই দেশের ফুটবলার কে ফাঁসি দেয়া হতে পারে। এই ঘটনা কানে যেতে তীব্র বিরোধিতা করছেন সেই দেশের ফুটবলারদের সংস্থা ফিফপ্রো।

ইরানের একটি ওয়েবসাইট জানিয়েছে, আমির নাসের-আজাদানি এবং আরও দুই ব্যক্তিকে জোর করে সরকার পরিচালিত একটি টিভি চ্যানেলে হাজির করে অপরাধের জন্য ক্ষমা চাইতে বাধ্য করানো হয়েছে। তাতেও শাস্তি কমছে না। মৃত্যুদণ্ড দেওয়ার কথা ভাবছে ইরানের সরকার।

এখনও দেশজুড়ে হিজাব-বিরোধী প্রতিবাদ চলছে তরুণী মাহশা আমিনির মৃত্যুর প্রতিবাদ ইরানে। আমির সেরকমই একটি প্রতিবাদে অংশ নিয়েছেন।স্থানীয় মানুষের সঙ্গে সংঘর্ষে ইরানের সেনাবাহিনীর কলোনেল এস্মায়েল চেরাঘি এবং আরও দুই সেনার মৃত্যু হয়। আমিরকে সেই মৃত্যুর জন্য দোষী সাব্যস্ত করা হয়েছে।তবে স্থানীয়রা জানিয়েছেন, স্লোগান দেওয়া ছাড়া আমির আর কোনও অপরাধমূলক কাজের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। সেনাবাহিনীর তিন কর্মীর মৃত্যুর সঙ্গে তাঁর কোনও যোগাযোগ নেই।

সেসব শুনতে অবশ্য রাজি নয় ইরানের সরকার। তারা মনস্থির করে ফেলেছে আমিরকে মৃত্যুদণ্ড দেয়ার ব্যাপারেও।এর প্রতিবাদ জানিয়ে ফিফপ্রো টুইট করেছে, “মহিলাদের অধিকার এবং স্বাধীনতার পক্ষে দাঁড়ানোর অপরাধে পেশাদার ফুটবলার আমির নাসের-আজদানি ইরানে মৃত্যুদণ্ডের সামনে দাঁড়িয়ে, এটা জানতে পেরে আমরা প্রচণ্ড অবাক। আমরা আমিরের পাশে রয়েছি এবং তাঁর বিরুদ্ধে নেওয়া সিদ্ধান্ত প্রত্যাহারের দাবি জানাচ্ছি।”

প্রসঙ্গত, বিশ্বকাপের প্রথম ম্যাচে জাতীয় সঙ্গীতের সঙ্গে গলা মেলাননি ইরানের ফুটবলাররা। এই কাজ করেন সরকার বিরোধী প্রতিবাদকে সমর্থন জানিয়েই।ফুটবলারদের সিদ্ধান্তকে সমর্থন জানান স্টেডিয়ামে হাজির ইরানের সমর্থকরা।সর্দার আজমুনদের সিদ্ধান্ত দেশে ব্যাপক সমর্থিত হয়। তারপরেই ইরানের ফুটবলারদের হুমকি দেয় ইরানের সরকার।সাফ বলে দেওয়া হয়, পরের ম্যাচে জাতীয় সঙ্গীতের সঙ্গে গলা না মেলালে ফুটবলারদের পরিবারের উপর ‘অত্যাচার’ চালানো হবে। তেহরানের বিরুদ্ধে কোনও রকম বিরোধিতা বরদাস্ত করা হবে না। এর পরেই ওয়েলস ম্যাচে ইরানের ফুটবলাররা জাতীয় সঙ্গীতে গলা মেলান।

ইরানের সরকারের তরফ থেকে বেশ কিছু ব্যক্তি পাঠানো হয়েছে ফুটবলারদের ওপর নজর রাখার জন্য। কাতারে পাঠানো হয়েছে প্রায় ১২ জন আধিকারিক সরকারের তরফ থেকে।প্রতিটি ফুটবলারের কার্যকলাপ নজরে রাখছেন তারা। দলের বাইরে কারওর সঙ্গে দেখা করার অধিকার নেই ফুটবলারদের। কোনও বিদেশির সঙ্গে কথা বলতে পারবেন না তাঁরা। ইরান সরকারের আধিকারিকরা প্রতি মুহূর্তে তথ্য সংগ্রহ করে দেশে পাঠাচ্ছেন।

ইরান রেভলিউশনারি গার্ড ফোর্সেসের (আইআরজিসি) সদস্যরা ইরানের কোচ কার্লোস কুইরোজ়ের সঙ্গে বৈঠক করেন। সেখানেই কুইরোজ়কে হুঁশিয়ারি দিয়ে দলের ফুটবলারদের শান্ত থাকতে বলা হয়। জানা গিয়েছিল, বিশ্বকাপগামী দলের সদস্য উপহার এবং গাড়ি দেওয়া হবে। তবে সরকার-বিরোধী কাজকর্ম করায় সে সব তো দূর, দেশে ফিরলে জেলে পুরে দেওয়ার হুমকি দেওয়া হয়েছে।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Adblock Detected

Please Turn Off Your Ad Blocker.