অবশেষে, দীর্ঘ ভাবনা চিন্তার পরে, ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) এবং G-7 তেলের দাম কমানোর একটি প্রস্তাব অনুমোদন করেছে। মার্কিন অর্থমন্ত্রী জ্যানেট ইয়েলেনও ট্যুইট করে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের দিকে ইঙ্গিত করে তিনি বলেন যে এটি রাশিয়ার রাষ্ট্রপতি ভ্লাদিমির পুতিনের আয়কে প্রভাবিত করবে এবং ‘বর্বর যুদ্ধ চালিয়ে যাওয়ার জন্য অর্থের সংস্থান সীমিত করবে’। অন্যদিকে, রাশিয়া এই সিদ্ধান্তের সমালোচনা করেছে এবং বলেছে যে ‘তেলের দাম বেঁধে দেওয়ার মাধ্যমে ইউরোপীয় ইউনিয়ন তার নিজস্ব জ্বালানি নিরাপত্তাকে ঝুঁকির মধ্যে ফেলছে’।
কী বলেন মার্কিন অর্থমন্ত্রী
মার্কিন অর্থমন্ত্রী জ্যানেট ইয়েলেন বলেছেন, ‘তেলের দাম বেঁধে দেওয়া হলে নিম্ন ও মধ্য আয়ের দেশগুলো উপকৃত হবে বিশেষ করে, যারা তেল-গ্যাস ও শস্যের মূল্যবৃদ্ধির সমস্যায় ভুগছে’। পাশাপাশি তিনি এই সিদ্ধান্তকে রাশিয়া ও ইউক্রেন যুদ্ধের সঙ্গেও যুক্ত করেছেন। তিনি বলেন, ‘রাশিয়ার অর্থনীতি ইতিমধ্যে অনেকটা কমেছে।
কী আছে নিয়ম?
তেলের দাম নির্ধারণের সময় ইউরোপীয় ইউনিয়নের জানানো নিয়ম অনুসারে, এই ইউনিয়নের অন্তর্ভুক্ত দেশগুলি সমুদ্রপথে রপ্তানি করা রাশিয়ান তেলের দাম প্রতি ব্যারেল ৬০ ডলারের বেশি দেবে না। রাশিয়ান তেলের দামের এই সীমা পাঁচ ডিসেম্বর অথবা তার পরেই কার্যকর করা হবে। রাশিয়ার আয়ের উৎসকে সঙ্কুচিত করতে এই প্রয়াস চালানো হয়েছে।
রাশিয়া বলেছে, এর পরিণতি হবে মারাত্মক
একইভাবে এই সিদ্ধান্তের পর আক্রমণ শুরু করেছে রাশিয়া। সমালোচনার পাশাপাশি এর পরিণতি ভোগ করারও হুমকি দিয়েছেন পুতিন। রাশিয়া বলেছে যে তারা তেলের দামের উপর আরোপিত সীমা অনুযায়ী তেল কিনতে চায় এমন দেশগুলির কাছে তারা তেল বিক্রি করবে না। রাশিয়া আরও বলেছে, এভাবে তেলের দাম বেঁধে দিয়ে ইউরোপীয় ইউনিয়ন নিজেদের জ্বালানি নিরাপত্তা ঝুঁকির মধ্যে ফেলছে।
কঠোর পদক্ষেপের পরেও রাশিয়া এমনই থাকবে
ইন্টারন্যাশনাল এনার্জি অ্যাসোসিয়েশনের মতে, যুদ্ধ শুরুর আগে, ২০২১ সালে, রাশিয়া তার অর্ধেকেরও বেশি তেল ইউরোপে রফতানি করত। এর বৃহত্তম রফতানির জায়গা ছিল যথাক্রমে জার্মানি, নেদারল্যান্ডস এবং পোল্যান্ড। কিন্তু ইউক্রেনে হামলার পর ইইউভুক্ত দেশগুলো রাশিয়া থেকে আসা তেল এবং গ্যাসের উপর তাদের নির্ভরতা কমাতে শুরু করে।
রাশিয়ার আয় বন্ধ করতেই এই পুরো কাজ করা হচ্ছে। তবে ভারত এবং চিন যতদিন রাশিয়া থেকে তেল কিনছে ততদিন এই সিদ্ধান্ত রাশিয়াকে প্রভাবিত করবে না বলেই মনে করা হচ্ছে। বর্তমানে রাশিয়ার তেলের সবচেয়ে বড় ক্রেতা ভারত এবং চিন।