তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক তথা ডায়মন্ড হারবারের সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় খারাপ পরিষেবা দেওয়া নিয়ে গ্রামবাসীদের অভিযোগ শোনার পর, গ্রাম পঞ্চায়েত প্রধান, উপপ্রধান এবং অঞ্চল সভাপতিকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে ইস্তফা দেওয়ার নির্দেশ দিলেন। এমনই ছবি শনিবার কাঁথিতে তৈরি হলো। অভিষেক হুঁশিয়ারি দিয়েছেন এই পদাধিকারীরা ইস্তফা না দিলে তাঁদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
শনিবার এই ঘটনার সূত্রপাত।কাঁথির সভায় যাওয়ার আগে অভিষেক কনভয় থামিয়ে ঢুকে পড়েন মারিশদা এলাকার একটি গ্রামে। তিনি সেখানকার বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলেন। তিনি বাসিন্দাদের দুঃখ দুর্দশার কথা জানতে পারেন।গ্রামবাসীরাও অভিষেককে কাছে পেয়ে জানান, তাঁদের অনেকে পাকা বাড়ি পাননি। এ ছাড়াও এলাকায় জলকষ্ট এবং নিকাশি নিয়ে সমস্যার কথাও তুলে ধরেন তাঁরা। মন দিয়ে সেই সব কথা শোনে না অভিষেক।এর পর কাঁথির সভাস্থলে যাওয়ার পথে অভিষেক খোঁজখবর নেন ওই গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান এবং উপপ্রধান সম্পর্কে। মঞ্চে উঠে কাঁথি ৩ নম্বর ব্লকের মারিশদা ৫ নম্বর গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান ঝুনুরানি মণ্ডল, উপপ্রধান রমাকৃষ্ণ মণ্ডল এবং অঞ্চল সভাপতি গৌতম মিশ্রকে ইস্তফা দিতে তিনি নির্দেশ দেন। বলেন, ‘‘৪৮ ঘণ্টার মধ্যে মারিশদার ওই গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান এবং উপপ্রধানের ইস্তফা চাই। না ইস্তফা দিলে আইনি ব্যবস্থা নেব এবং সরকারকে প্রশাসনিক ব্যবস্থা নেওয়ার অনুরোধ করব।’’
অভিষেকের বক্তব্য,‘‘তৃণমূলের চিহ্নে জিতব আর বিজেপির দালালি করব? যাঁরা এ সব ভাবছেন তাঁদের সকলের তালিকা আমার কাছে আছে। তাঁদের মেরুদণ্ড কোথায় রাখা আছে আমি জানি। মানুষের কাজ না হলে আমাদের রাজনীতি করে লাভ নেই।’’ অভিষেক স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন চাটুকারিতা করে কোন প্রার্থী হওয়া যাবে না তৃণমূলের।পাশাপাশি, এ-ও জানিয়েছেন, ভোটে জিতলে সদস্যদের জাতিধর্ম বলে কিছু নেই, সব মানুষ পরিষেবা পাচ্ছেন কি না তা দেখতে হবে।
অভিষেক শনিবার সভার আগে মারিশদার ওই গ্রামে পৌঁছতেই তাকে দেখে ছুটে যান মহিলারা শিশুসহ অনেকে। অভিষেক ও তাদের সাথে আলাপ-আলোচনা শুরু করেন।অভিষেক পাল্টা প্রশ্ন করেন, ‘‘রেশন পান?’’ উপস্থিত জনতা জবাব দেয়, ‘‘আমরা রেশন পাই। কিন্তু অনেক সরকারি ভাতা পাই না।’’ মহিলা এলাকার নিকাশের সমস্যার কথা তুলে ধরেন তার কাছে।অভিষেক তাঁকে বলেন, ‘‘চলুন, দেখে আসি।’’ তারপরই মহিলার সঙ্গে গ্রামে ঢুকে পড়েন।সাহায্যের আশ্বাস দিয়ে বলেন, ‘‘আমি দেখে গেলাম। যা করার করব।’’ এর পর বলেন, ‘‘আমি যখন তখন চলে আসব। এক কাপ চা খেয়ে যাব।’’ পরে মঞ্চে উঠে সেই অভিজ্ঞতার কথা তুলে ধরেন ডায়মন্ড হারবারের সাংসদ। তুলে ধরেন মারিশদার ওই বাসিন্দাদের ‘করুণ’ অবস্থার কথা। পদত্যাগের নির্দেশ দেন তিন জনকে। বছর ঘুরলে রাজ্যে পঞ্চায়েত নির্বাচন।অভিষেকের তার আগেই তাৎপর্যপূর্ণ পদক্ষেপ।