Advertisement
অফবিট

ফসলের চাষ করে এই মহিলার এখন বার্ষিক উপার্জন ২৫ লাখ টাকা

কথাতেই আছে সংসার সুখী হয় স্বামীর ইনকাম ও রমনীর গুনে। যদি কোন সংসারে স্বামী-স্ত্রীর কোন একজনের অকাল মৃত্যু হয় তাহলে সেই সংসার অসময়ে ভেসে যায়। কোন সংসার উন্নতির জন্য স্বামী-স্ত্রীর একে অপরের সাহায্যের প্রয়োজন। যদি কোন সংসারে এক নারী স্বামীহারা হয়ে যায় তাহলে সেই সংসারের দায়ভার সবটাই এসে পড়ে স্ত্রীর উপর।

নিজের সন্তান দেখাশোনা বাড়ির বাইরের সমস্ত দায়িত্ব আসে মায়ের উপর। আজকের এই নিবন্ধে আমরা আপনাকে এমনই এক মায়ের কথা বলব। যিনি অল্প বয়সে স্বামীকে হারিয়ে একাই সংসার সামলাচ্ছেন। যিনি নিজের ১৩ একর জমিতে আঙ্গুর ফার্ম করে প্রতিবছর ২৫ থেকে ৩০ লাখ টাকা উপার্জন করছেন। জানা যাক এই মহিলার বিস্তারিত কাহিনী।

হ্যাঁ, আমরা আপনাকে মহারাষ্ট্রের নাসিক শহরের বাসিন্দ সঙ্গীতা পিংলের কথা বলতে যাচ্ছি। যিনি অল্প বয়সে স্বামীকে হারিয়ে সমস্যার সম্মুখীন হয়ে একাই সবকিছু সামলাচ্ছেন। এই মহিলা কষ্টের সাথে লড়াই করে, কঠোর পরিশ্রম করে ১৩ একর জমিতে আঙ্গুর চাষ করেন। তিনি চাষ শুরুর সময় তার সমস্ত গহনা বিক্রি করেন, আজকের দিনে তিনি একজন সফল মহিলা চাষী।

সাধারণত এক মহিলার বাইরের দুনিয়ার কাজ বা চাষবাসের কাজ সমাজ ভালো চোখে দেখেনা। কিন্তু এই মহিলা এগিয়ে এসে মানুষের চিন্তাধারাকে পরিবর্তন করেছে। মহিলারাও যে সব কাজ করতে পারে, মহিলারা যে কোন কাজে পিছিয়ে থাকে না, সঙ্গীতা তার একটা দৃষ্টান্ত প্রমান।

এই মহিলা ১৩ একর জমিতে আঙ্গুরের পাশাপাশি টমেটো ও আরও অন্যান্য সবজি চাষ করেন। তিনি প্রতি বছর কমপক্ষে ৮ থেকে ১০ টন আঙুর ও টমেটো উৎপাদন করে থাকেন। যেখান থেকে ইনকাম হয় প্রায় ২৫ থেকে ৩০ লাখ টাকা। এই মহিলাকে দেখা যায় তিনি নিজেই জমি চাষের জন্য ট্রাক্টর চালনা করেন। যা পুরুষের থেকে কোন অংশে কম না।

আমরা আপনাকে বলি, সঙ্গীতার স্বামী পথ দুর্ঘটনায় মারা যান। তারা যেখানে বসবাস করতেন সঙ্গীতার কাছে ছিল না কোন চাকরি করার উপায়। তার স্বামী কৃষি কাজ করেই সংসার চালাতেন। তাই সঙ্গীতাও স্বামীর কাজ চালিয়ে যাওয়ার চিন্তা-ভাবনা নেন। তিনি বলেন, “আমি যখন প্রথম প্রথম চাষের কাজ শুরু করি, তখন আশপাশের লোক নানান কথা বলতো। এসব কাজ নারীর কাজ না। কিন্তু আমি তাদের তোয়াক্কা না করে নিজের উপর বিশ্বাসী ছিলাম।”

আমরা আপনাকে বলি, সঙ্গীতা একজন বিজ্ঞানের ছাত্রী ছিল। তাই তার ক্ষেত্রে এই কাজ শুরুটা সহজ ছিল না। শুরুর সময় ছিল না কোন টাকা সঞ্চয়। তিনি নিজের গহনা বিক্রির পাশাপাশি ঋণ নিয়ে কঠিন পরিস্থিতির মধ্যে এই কাজে নামেন। বিনা অভিজ্ঞতা তিনি এই কাজ শুরু করলেন কখনোই হাল ছাড়েনি।

তিনি একজন বিজ্ঞানের ছাত্রী হওয়ায় জৈবিক খেতি ও আধুনিক চাষকে নিজের অস্ত্র বানিয়েছে। তিনি বলেন, এই কাজে আমাকে অনেক কঠোর পরিশ্রম করতে হয়েছে। কিন্তু আমি কখনো হাল ছাড়িনি, তাই আজ আমি একজন সফল মহিলা কৃষক। আজকের দিনের সঙ্গীতা প্রতি বছর ২৫ থেকে ৩০ লাখ টাকা উপার্জন করেন। তার উৎপাদিত আঙুরগুলি ওয়াইন তৈরির জন্য অনেক ওয়াইন ইয়ার্ডে পাঠানো হয়।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Adblock Detected

Please Turn Off Your Ad Blocker.