Advertisement
দেশরাজনীতি

এনআরসি নিয়ে প্রথম পদক্ষেপ নিল কেন্দ্র, আবারও কি দেশজুড়ে ঝড় উঠবে প্রতিবাদের

জাতীয় নাগরিক পঞ্জি বা ন্যাশনাল রেজিস্টার অফ সিটিজেন্স নিয়ে জল্পনা–কল্পনা, বিতর্ক অতীতে বহু হয়েছে। এমনকী এটা কবে থেকে শুরু হবে তা নিয়েও দেশবাসীর মনে একাধিক প্রশ্ন আছে। তবে এবার জাতীয় নাগরিক পঞ্জি বা এনআরসি তার প্রথম পদক্ষেপ নিয়ে ফেলল। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক পরিকল্পনা করেছে যে ভারতীয় নাগরিকদের তথ্য সংগ্রহের জন্য ডেটাবেস তৈরি করবে, জাতীয় স্তরে সব নাগরিকদের জন্ম ও মৃত্যুর তথ্য নথিভুক্ত করবে।
ইতিমধ্যেই স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের তরফে এই বিষয়ে ক্যাবিনেট নোট ও বিল পেশ করা হয়েছে। বর্তমানে এই ডেটাবেস পরিচালনা করছে রাজ্যগুলি তাদের স্থানীয় রেজিস্ট্রারদের মাধ্যমে। এর আগে শেষবারের মতে স্বেচ্ছায় আধার কার্ডের সঙ্গে ভোটার আইডি কার্ড যুক্ত করার প্রস্তাবটি সংসদে কঠোর আপত্তির মুখে পড়েছিল সেই সময় নির্বাচন কমিশন জনপ্রতিনিধিত্ব আইন সংশোধন করার সুপারিশ দেয়। কেন্দ্রের পরিকল্পনা অনুযায়ী, রেজিস্ট্রারার জেনারেল অফ ইন্ডিয়া নাগরিকদের জন্ম–মৃত্যুর নথি বা ডেটাবেস আপডেট ও নিয়ন্ত্রণ করবে। রাজ্যের রেজিস্ট্রারারদের সঙ্গে মিলিতভাবে এই কাজ করবেন তারা। নিয়মিত বা নির্দিষ্ট সময় অন্তর আধার, রেশন কার্ড, নির্বাচন কমিশন, পাসপোর্ট ও ড্রাইভিং লাইসেন্স দেওয়ার সংস্থা বা কর্তৃপক্ষের সাহায্য নিয়ে ডেটাবেস আপডেট করা হবে। বর্তমানে জন্ম ও মৃত্য়ুর নথি রাজ্য় স্তরেই রেজিস্টার বা নথিভুক্ত থাকে। তবে কেন্দ্রের পরিকল্পনা, এবার থেকে এই জন্ম-মৃত্য়ুর নথি কেন্দ্রীয় স্তরে সংরক্ষণ করা হবে।
বলা হয়েছে, সরকার কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের দেশব্যাপী এনআরসিকে বাস্তবায়িত করা পথে এগিয়ে যেতে চায়, যাতে জাতীয় জনসংখ্যা রেজিস্টারকে একীভিত ও আপডেট করে সরকার অবৈধ বলে অভিবাসীদের চিহ্নিত করে দেশ থেকে বিতাড়িত করতে পারে। এনআরসির পরিকল্পনা প্রথম শুরু হয়েছিল অসমে, এর সঙ্গে চালু হয় বিতর্কিত নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন বা সিএএ। যা নিয়ে তিনবছর আগে দেশজুড়ে ব্যাপক প্রতিবাদ–বিক্ষোভ চলে। এই সিএএ নিয়ে প্রতিবাদরত সমালোচকরা সেই সময় জানিয়েছিলেন যে সিএএ–কে সঙ্গে নিয়ে, যেখানে বলা হয়েছে প্রতিবেশী দেশের কোনও শরণার্থী যদি ভারতে ২০১৫ সালের আগে এসে থাকেন তবে তাঁকে নাগরিকত্ব প্রদান করা হবে, তবে সেটা তখনই যদি তাঁরা মুসলিম না হন, এনআরসি প্রক্রিয়ার ফলে সংখ্যালঘু সম্প্রদায় অত্যাচারিত হতে পারেন বলে আশঙ্কা প্রকাশ করা হচ্ছে সমাসোচকদের পক্ষ থেকে। এরপরে নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন বা সিএএ নিয়ে দেশজুড়ে বিতর্ক-বিক্ষোভের আগুন ছড়িয়ে পড়তেই ওই কাজ সাময়িকভাবে বন্ধ রাখা হয়। এরপরে করোনা সংক্রমণের কারণেও গণশুমারির কাজ করা সম্ভব হয়নি। সরকার সূত্রে জানা গিয়েছে যে মন্ত্রীসভায় শীঘ্রই এই প্রস্তাবটি গ্রহণ করা হবে বলে আশা করা হচ্ছে এবং সংসদের পরবর্তী অধিবেশনে এই সংশোধনী বিল পেশ করা হতে পারে।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Adblock Detected

Please Turn Off Your Ad Blocker.