পাহাড়ে জিটিএ (গোর্খাল্যান্ড টেরিটোরিয়াল অ্যাডমিনিস্ট্রেশন) বোর্ড গঠন হওয়ার পর সোমবার তার প্রথম অধিবেশন হল। এদিন জিটিএ-প্রধান অনীত থাপা জানিয়েছেন, আলাদা রাজ্য ‘গোর্খাল্যান্ড’-এর দাবিতে ফের আলোচনা শুরু করা হবে। প্রথম অধিবেশনেই পাশ হয়েছে গোর্খাল্যান্ড প্রস্তাব। পাশাপাশি এদিন আরও ৫৫টি প্রস্তাব পাশ করানো হয়েছে।
এই প্রথমবার নির্বাচিত কোনও বোর্ড গোর্খাল্যান্ডের দাবিতে প্রস্তাব পাশ করানো হয়েছে। তাছাড়া এদিন পাহাড়ের ১১টি জনজাতিকে উপজাতির স্বীকৃতির দাবিও পাশ করানো হয়েছে। পাহাড়ের বুকে গণতন্ত্র ফিরে এসেছে, এই দাবি তুলে উচ্ছ্বসিত জিটিএর সদস্যরা। এদিন এই অধিবেশনে উপস্থিত ছিলেন প্রত্যেক সদস্য। বিভিন্ন প্রস্তাব আনা হয়। তার মধ্যে প্রায় এক ডজন গুরুত্বপূর্ণ প্রস্তাব-সহ মোট ৫৫টি প্রস্তাব পাশ করানো হয়।
জিটিএতে অস্থায়ী কর্মীদের স্থায়ীকরণ, জিটিএ কর্মী নিয়োগে আলাদা বোর্ড গঠন করে নিয়োগ শুরু, জিটিএর স্কুলগুলির জন্য আলাদা স্কুল সার্ভিস কমিশন তৈরি, জিটিএ-সভায় ৪৫ আসনের মধ্যে অন্তত দু’টি আসন উপজাতিদের জন্য সংরক্ষণ, তামিলনাড়ুর ভেলোরে গোর্খা কল্যাণ কেন্দ্র তৈরির প্রস্তাব পাশ করানো হয়েছে।
চার দিন আগেই কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভা হিমাচল, ছত্তীসগঢ়, কর্নাটক, তামিলনাড়ু ও উত্তরপ্রদেশের মোট ১৫টি সম্প্রদায়কে জনজাতি তালিকাভুক্ত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। কিন্তু এই তালিকায় দার্জিলিং ও কালিম্পং পাহাড়ের কোনও সম্প্রদায়কে রাখা হয়নি। অথচ দীর্ঘ দিন ধরে উপজাতি স্বীকৃতির দাবি জানিয়ে আসছেন ১১ গোর্খা জনজাতির মানুষ জন। কেন্দ্রের তরফে আশ্বাসও মিললেও কাজ হয়নি।
এ বার জিটিএ প্রধান অনীত প্রথম অধিবেশনেই সর্বসম্মতভাবে গোর্খাদের ১১ জনজাতিকে উপজাতি স্বীকৃতির দাবিতে প্রস্তাব পাশ করালেন । প্রস্তাবে বলা হয়েছে, ত্রিপক্ষীয় চুক্তির ভিত্তিতে ১১ জাতিকে উপজাতি স্বীকৃতি দিতে হবে। এদিন জিটিএ প্রধান অনীত বলেন, ‘‘গোর্খাল্যান্ড নিয়ে আলোচনা শুরু করার প্রস্তাব পাশ করানো হয়েছে। এর আগে ১১ বার আলোচনা হয়েও লাভ হয়নি। তবে আমরা গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে গোর্খাল্যান্ডের জন্য লড়ব। তাই সোমবার প্রস্তাব পাশ করানো হয়েছে।’’
অন্যদিকে তৃণমূলের বিনয় তামাং বলেন, ‘‘এ ভাবে প্রস্তাব পাশ করালেই সব হয়ে যায় না। তার জন্য কেন্দ্র ও রাজ্যের সম্মতির প্রয়োজন রয়েছে। তাই তাদের কাছে পাঠাতে হবে এই প্রস্তাব।’’ আবার অন্য হামরো পার্টির সুপ্রিমো অজয় এডওয়ার্ড জানান, ‘‘পাহাড়ের মানুষের কাছে সোমবার এক ঐতিহাসিক দিন। পাহাড়ে গণতন্ত্র ফিরে এসেছে। মানুষ তার নিজের মত প্রকাশ করতে পারছে। সোমবার অধিবেশনে যা আলোচনা হয়েছে, তা সাধুবাদযোগ্য।’’