আরও একবার রাজ্যের শাসক দল তৃণমূলকে আক্রমণ করতে গিয়ে নিজের দলকে অস্বস্তিতে ফেলে দিয়েছেন দিলীপ ঘোষ। রবিবার কলকাতায় কেন্দ্রীয় সংস্কৃতি মন্ত্রকের একটি অনুষ্ঠানে দিলীপের বক্তব্যের কারণে ক্ষুব্ধ বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব। এবিষয়ে সরাসরি রাজ্য দলের থেকে রিপোর্ট চেয়েছে কেন্দ্র।
রবিবার বিজেপির সর্বভারতীয় সহ-সভাপতি দিলীপ ঘোষের বক্তব্যে দলের উপর অনাস্থার ছাপ স্পষ্ট। তাই রবিবার দিলীপ ঠিক কী কী বলেছিলেন, তা রাজ্য নেতৃত্বের কাছে জানতে চেয়েছেন গেরুয়া শিবিরের শীর্ষনেতৃত্ব। জানা গিয়েছে, দিলীপের বক্তব্যের ভিডিও ছাড়াও তাঁর বক্তব্যের হিন্দি ও ইংরেজি অনুবাদও চেয়েছে কেন্দ্র।
এদিন দিলীপ কী বলেছেন, তা নিয়ে রিপোর্ট চেয়েছেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। তার পাশাপাশি দলের সর্বভারতীয় সভাপতি জেপি নড্ডাও আলাদা করে রিপোর্ট চেয়েছেন। রাজ্য দলের কাছে একই বার্তা পাঠিয়েছেন সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক (সংগঠন) বিএল সন্তোষও।
অতীতে দলকে অস্বস্তিতে ফেলার জন্য দিলীপ ঘোষকে বহু বার সতর্ক করা হয়েছে। সম্প্রতি বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের তরফে চিঠি পাঠিয়েo মুখ বন্ধ রাখতে বলা হয়েছিল। এবার আর তাই প্রাক্তন দিলীপকে আলাদা ভাবে কিছু না জানিয়ে সরাসরি রাজ্য দলের থেকে রিপোর্ট চাওয়া হয়েছে।তবে এত কিছুর পরও দিলীপ থেমে থাকেননি। সোমবারেও তিনি তাঁর বক্তব্যে অনড় থেকেছেন।
রবিবার দিলীপ বলেছিলেন, “আদালতের নির্দেশে সিবিআই তদন্ত হলেও কোনও কাজ হচ্ছিল না। গত কয়েক বছর ধরেই বাংলায় সিবিআইয়ের সঙ্গে সেটিং চলছিল। সিবিআইয়ের কোনও কোনও আধিকারিক বিক্রি হয়ে গিয়েছেন। সেটা বুঝতে পেরেই রাজ্যের বিভিন্ন মামলার তদন্ত ইডিকে দিয়েছে কেন্দ্র।”
তিনি আরও বলেন, “সিবিআইয়ের একটি অংশের সঙ্গে তৃণমূল নেতাদের ‘সেটিং’ হয়ে গিয়েছিল বুঝতে পেরেই এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি)-কে পাঠিয়েছে কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রক।’’ সোমবার দিলীপ নিজের বক্তব্যে অনড় থেকে বলেন, “সিবিআই কার, তাতে আমার কিছু এসে যায় না। সিবিআই দেশের একটা সংস্থা। তাদের বিশ্বাস করেছিলাম। কিন্তু ন্যায় পাইনি। ইডি প্রমাণ করেছে তারাই সবচেয়ে বিশ্বস্ত এজেন্সি।’’
সিবিআই কেন্দ্রীয় কর্মিবর্গ মন্ত্রকের অধীন। যে মন্ত্রক রয়েছে স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর হাতে। আর এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি) অর্থমন্ত্রী অর্থাৎ, নির্মলা সীতারামনের অধীন। যদিও বিজেপি শিবিরের দাবি, কেন্দ্রীয় সরকারের তরফে দু’টি সংস্থার পরিচালনাই দেখেন অমিত শাহ। রবিবার দিলীপের বক্তব্যের পর গেরুয়া শিবিরের অনেকে মনে করছেন, এই বক্তব্যের মাধ্যমে দিলীপ পরোক্ষে এটাই বুঝিয়েছেন যে, মোদীর অধীনস্থ সিবিআইয়ের পরিবর্তে সীতারামনের ইডিতেই বেশি ‘আস্থা’ রাখেন তিনি।