যেদিকেই যত দূর দেখা যায় শুধু বালি আর বালি। মাঝে মধ্যে মাথা উঁচু করে রয়েছে গ্রানাইটের দু-একটি ছোট্ট টিলা। মিশর এবং সুদানের অবস্থিত এই মরু-অঞ্চলে নেই কোনো প্রাণ। আর না আছে এই অঞ্চল নো-ম্যানস ল্যান্ডের কোনো দাবিদার।
প্রসঙ্গত, দক্ষিণ মিশর এবং সুদানের মধ্যবর্তী প্রায় ২০৬০ বর্গকিলোমিটার জুড়ে এই জায়গা ফাঁকা পড়ে আছে। এর নাম বীর তাইইল। এখনও পর্যন্ত কোনো দেশই এই জায়গার দাবি করেনি। তবে বছর কয়েক আগে এক ভারতীয় নিজেকে এই জায়গার রাজা বলে দাবি করে। এবং বলেন, তার বাবা এই জায়গার রাস্ট্রপতি। একটা মানুষ একটা গোটা দেশের মালিক, ভাবা যায়!
সম্প্রতি এই ভারতীয় ব্যক্তির নাম সুযশ দীক্ষিত। ভারতের ইন্দোরের বাসিন্দা তিনি। আদ্যোপান্ত অ্যাডভেঞ্চার প্রিয় এই মানুষটিকে তার নেশাই করে তুলেছে একটা আস্ত দেশের মালিক। এখন মনে প্রশ্ন জাগতে পারে যে, তাহলে সুযশের এই দাবি নিয়ে কোনো প্রশ্নই বা তোলেনি কেন মিশর এবং সুদান?
জানা যায় উনিশ শতকের শেষের দিকে তখন সুদান এবং মিশর দুটো দেশই ব্রিটিশ শাসনের অধীনে। পরবর্তী সময়ে দেশ দুটি স্বাধীন হলে ব্রিটিশ শাসকই তৈরি করে দিয়েছিল দুটো দেশের মানচিত্র। জনবসতি এবং উপজাতি জনঘনত্বের ওপর ভিত্তি করেই ঠিক করা হয়েছিল দেশের সীমানা। এরমধ্যে দুটি জায়গা ছিল যেখানে কোনো মানুষই বাস করতনা। যার একটি হল আজকের আলোচ্য স্থান বীর তাউইল এবং দ্বিতীযটি হল ‘হালাই-ব ট্রাইঅ্যাঙ্গেল’। তবে পরবর্তী সময়ে বাণিজ্যিক সুবিধার কারণে ‘হালাই-ব ট্রাইঅ্যাঙ্গেল’ নিয়ে মিশর সরব হলেও ‘বীর তাউইল’ নিয়ে কেউই বিশেষ আগ্রহ দেখায়নি। তবে বর্তমানে শোনা যাচ্ছে যে, লোহিত সাগরের কাছে অবস্থিত এই শুষ্ক মরুভূমির নীচেও নাকি রয়েছে তরল সোনা অর্থাৎ প্রাকৃতিক তেল। এরপর সাল ২০১৪ তে মার্কিন নাগরিক জেরেমি হিটন নামক এক ব্যক্তি নিজেকে এই দেশের রাজা বলে দাবি করলেও পরবর্তী সময়ে তা ছেড়ে চলে যান।