ভারতের দক্ষিণী সিনেমার সুপারস্টার অভিনেত্রী সামান্থা রুথ প্রভু। গতকাল (শনিবার) নিজের ইনস্টাগ্রাম অ্যাকাউন্টে বাম হাতের রক্তনালিতে ওষুধের নল লাগানো একটি ছবি প্রকাশ করেন সামান্থা। আর জানান মায়োসাইটিস নামের একটি রোগ বাসা বেঁধেছে অভিনেত্রীর শরীরে। ছবি প্রকাশের সঙ্গে সঙ্গেই উদ্বেগ দেখিয়েছেন অনুরাগীরা।
ওই ইনস্টাগ্রাম পোস্টে অভিনেত্রী লিখেছেন, “কয়েক মাস আগে আমার একটি অটো ইমিউন রোগ ধরা পড়ে। রোগটির নাম মায়োসাইটিস। ভেবেছিলাম, সুস্থ হওয়ার পরেই সে কথা জানাব। কিন্তু যা ভেবেছিলাম, সুস্থ হতে তার তুলনায় বেশি সময় লাগছে।”
এনআরএস হাসপাতালের চিকিৎসক সৌরভ দাস এ রোগ সম্পর্কে বলেন, ” ‘মায়ো’ শব্দের অর্থ পেশি আর ‘আইটিস’ মানে প্রদাহ। কাজেই সোজা ভাষায় বলতে গেলে মায়োসাইটিস হল পেশির প্রদাহ। অটো ইমিউন মায়োসাইটিসে রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থা ভুলবশত দেহেরই সুস্থ সবল পেশিকে আক্রমণ করে। ফলে এই বিরল সমস্যায় পেশি দুর্বল হয়ে যায়।”
এই রোগের লক্ষণে কি?
প্রথম প্রথম দেহের বিভিন্ন অঙ্গে ব্যথা দেখা দেয়। হাত, পা, ঘাড়ের পেশিতে যন্ত্রণা শুরু হয়। যে কোনও পেশিতেই বাসা বাঁধতে পারে এই রোগ। পেশি এতই দুর্বল হয়ে যায় যে, রোগী মাঝেমধ্যেই পড়ে যেতে পারেন। একটানা দাঁড়িয়ে থাকলে কিংবা দীর্ঘ ক্ষণ বসে থাকলে ক্লান্ত লাগে শরীর।
চিকিৎসক বলেন, “ধরুন, রোগী বেশ কিছুক্ষণ চেয়ারে বসে আছেন, যেই উঠতে যাবেন মনে হবে শরীর আর দিচ্ছে না।” যদি খাদ্যনালির পেশি কিংবা ডায়াফ্রাম পেশিতে এই সমস্যা হয়, তবে খাবার খেতে বা শ্বাস নিতেও সমস্যা হতে পারে। ঠিক মতো চিকিৎসা না হলে, শ্বাস-প্রশ্বাসের সমস্যা থেকে মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে।
তাহলে এই রোগের চিকিৎসা কী?
চিকিৎসক জানান, মূলত ইমিউনো সাপ্রেসিভ ও স্টেরয়েড জাতীয় ওষুধ দিয়ে চিকিৎসা হয় এই রোগের। তবে রোগের প্রকারভেদ রয়েছে। রোগের প্রকৃতি এবং রোগী চিকিৎসায় কতটা সাড়া দিচ্ছেন, তার উপর নির্ভর করছে অনেক কিছুই।
এই রোগের করবে কখনও কখনও সারা জীবনও ওষুধ খেতে হতে পারে রোগীকে। সামান্থা অবশ্য জানিয়েছেন, তাঁর চিকিৎসকেরা যথেষ্ট আত্মবিশ্বাসী যে, তিনি শীঘ্রই সেরে উঠবেন। শারীরিক ও মানসিক ভাবে অভিনেত্রীর মধ্যে প্রবল টানাপড়েন চলছে। তবে অসুস্থতার দিনগুলি কাটিয়ে উঠতে পারবেন বলেই বিশ্বাসী সামান্থা।