প্রসঙ্গত পথের পাঁচালী নিয়ে অনেক কিছু লেখা হয়েছে ; অনেক বিতর্ক, অনেক স্ক্রীনিং। আজও, ফিল্মটি দর্শকদের মুগ্ধ করে, 60 বছর আগে যেমন করেছিল। বিভূতিভূষণ যে মানুষ ও প্রকৃতির নিবিড় সম্পর্ক নিয়ে লিখেছেন তা সত্যজিৎ সুন্দরভাবে উপস্থাপন করেছিলেন তার সিনেমায়। অথচ, তখন তার হাতে ছিল না তেমন অর্থ।
এর পর প্রকাশ পেল ছবি , যা আপামর বাঙালি সহ দেশ বিদেশেও হল প্রশংসিত। বাঙালির নস্টালজিয়া হয়ে সবার মনে থেকে গেল সেই ছবির “অপু – দুর্গা”। এই অপুর চরিত্রে অভিনয় করেছিলেন ছোট্ট সুবীর বন্দোপাধ্যায়। সত্যজিৎ রায় তখন তার ‘অপু’র জন্য সারা শহর ঘুরে দেখেছিলেন। সময়টা ছিল ১৯৫১/৫২ সাল। অথচ তার সিনেমার জন্য এক্কেবারে আদর্শ একজন শিশুকে তিনি খুঁজে পেলেন তার লেক এভিনিউ এর বাড়ির ঠিক কয়েকটা বাড়ির পরেই এক প্রতিবেশী বাড়িতে।
একদিন ছোট্ট সুবির কে খেলতে দেখতে পেয়েছিলেন বিজয়া আর তিনি তৎক্ষণাৎ সত্যজিতের কাছে সুপারিশ করেন তাকে অপুর চরিত্রে নেওয়ার জন্য। সত্য যে তারপরেই তার নিজের বাড়িতে ডেকে পাঠান ছেলেটিকে। কথা বলার পরেই সত্যজিৎ মনে মনে ঠিক করেন এই ছেলেটিকেই তিনি অপু চরিত্রের জন্য নেবেন।
সম্প্রতি সুবীর এর আগে কখনো অভিনয় বিষয়টি সম্পর্কে কিছুই জানতেন না এবং তার বাবা-মাও ছিলেন একেবারেই অভিনয়ের বিমুখী। কিন্তু ছেলেকে ছবিতে অভিনয় করতে দেওয়ার কথা ভাবতে পারেননি তাঁরা। তখন চলচ্চিত্রে অভিনয় এখনকার মতো সাধারণ ব্যাপার ছিল না। আর হলোও তাই। কিন্তু এরপর আর কোন অভিনয় তিনি করেন নি। বরং কলকাতার শহরতলীতে একটি কারখানায় তিনি কাজ করেছেন চিরকাল। বর্তমানে তার বয়স প্রায় ৮০ ছুঁয়েছে। অপুকে নিয়ে উন্মাদনা এখনো থাকলেও বর্তমানের অপুকে নিয়ে সংবাদমাধ্যম বা বাঙালির তেমন উন্মাদনা নেই।