Advertisement
বিনোদন

অরিজিতার অপরাজিত গল্প অকপটে বললেন অভিনেত্রী

অরিজিতা মুখোপাধ্যায়, টেলিভিশন জগতের অন্য অন্যতম জনপ্রিয় মুখ। মুখ্য চরিত্রে দেখতে পাওয়া না গেলেও খল চরিত্র কিংবা বিভিন্ন সাইড ক্যারেক্টারে দেখতে পাওয়া গেছে তাকে। দৈহিক আকারের জন্য মানুষ কিছুটা ইতস্তত করলেও সেই ধরনের ভারী চরিত্রেই অভিনয় করেন অভিনেত্রী। এবার অভিনেত্রী জানালেন তার ক্যারিয়ারের কিছু গল্প। বলা যায় একেবারে অকপট অরিজিতা।

একটি বিশিষ্ট সংবাদ মাধ্যমের তরফে অভিনেত্রীকে প্রশ্ন করা হয়, ইন্ডাস্ট্রিতে অভিনেত্রী চেহারার জন্য ঠিক কতটা স্ট্রাগল করতে হয়। সেই প্রশ্নের উত্তর অভিনেত্রী জানান, “বাবা! আমাকে যথেষ্ট ভাল দেখতে নয়— শুধু এই বলে বেশ কিছু কাজ থেকে বাতিল করা হয়েছিল। সহকর্মী থেকে শুরু করে ইন্ডাস্ট্রির অনেকেই বডিশেমিং করেছে। যেন আমি একটা মাংসের তাল! আর কোনও অস্তিত্ব নেই! সেখান থেকে প্রমাণ করতে হয়েছে যে, অভিনয়টা পারি। ওটাই পারি, আর যত দিন যাবে আরও ভাল পারব। কিন্তু তার মানে এই নয় যে, চরিত্রের প্রয়োজনে আমি ওজন কমাব না! সেটা এক বারও বলিনি। এখনও দরকার হয়নি তাই নিজের চেহারাতেই ক্যামেরার সামনে আসি। ফিটনেস নিয়েও আমার কোনও সমস্যা হয়নি”।

তবে অভিনয় বলতে এমন নয় যে শুধু অভিনেত্রী বড় পর্দা কিংবা জড়িয়ে আছেন ওটিটি প্ল্যাটফর্মের সাথে। অভিনেত্রী নিজে গোটা একটা বছর ইংল্যান্ডের থিয়েটার প্রশিক্ষক হিসেবে কাজ করেছেন। অভিনেত্রী কিন্তু অতি উচ্চমানের অভিনেত্রী হওয়া সত্ত্বেও অভিনয় করেন ধারাবাহিকে। কিন্তু কেন? অভিনেত্রীর কথায়, “কেন নয়? টাকা রোজগার করতেই হত। বাবার অনেক বয়স হয়েছে। আমি বাড়ির একমাত্র উপার্জনকারী। কিন্তু প্রথম দিন থেকেই জানতাম, এই কাজটা সহজ হবে না। এটা চাকরির মতো নয়। তোমাকে প্রথম সুযোগটা কেউ দেবে, তার পর সুযোগগুলো নিজেকে করে নিতে হবে। ঝাঁপটা দিয়েই দিলাম। মনে হল,আরও আগেই শুরু করতে পারতাম অভিনয়টা। ব্যাকরণটা পোক্তই ছিল। শান্তিনিকেতনে বেড়ে ওঠা থেকে শুরু করে প্রেসিডেন্সি, যাদবপুরের পড়াশোনা অনেক সাহায্য করেছে”।

তবে শুধু ধারাবাহিক নয় ওটিটি প্ল্যাটফর্মে যথেষ্ট জনপ্রিয়তা অর্জন করেছেন অরিজিতা। বর্তমানে প্রচুর ধারাবাহিকে কাজ করছেন। কিন্তু যথেষ্ট জনপ্রিয়তা পেয়েছেন বড় পর্দা এবং ওটিটি প্লাটফর্মে। এ বিষয়ে অভিনেত্রী বলেন, “প্রত্যেকটা মাধ্যমই আলাদা। মঞ্চও সেই ছোট্টবেলা থেকে আমার প্রিয়। কিন্তু একটা সম্পূর্ণ অচেনা দর্শকগোষ্ঠীর সঙ্গে টেলিভিশনে কাজ করতে গিয়েই দেখা হল। যাঁরা কলকাতা, ক্যাফে, বুদ্ধিজীবী কালচারের মধ্যে অধিষ্ঠান করেন না। তাঁরাই আসলে দেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ জনসাধারণ। রোজ টেলিভিশন দেখেন। তাঁদের সামনে নিজেকে তুলে ধরা, প্রত্যেক সপ্তাহে পরীক্ষা দেওয়ার মতো। তাঁরাই দেশের ভোটব্যাঙ্ক। টিআরপির প্রকাশের দিন আমার বুক কাঁপে। তাঁরা আমায় পছন্দ করেছেন বলেই জোর পেয়েছি। তাঁরা কী চাইছেন, সেই অনুযায়ী নিজেকে পাল্টানোর চেষ্টা করি”।

অনেকগুলি ধারাবাহিকের সাথে সাথে নতুন ধারাবাহিকের কাজ শুরু হয়ে গিয়েছে। “নিম ফুলের মধু” সেই নতুন ধারাবাহিক। এই বিষয়ে অভিনেত্রী বলেন, “নতুন সিরিয়ালে কাজ শুরু করছি। সেখানে দুই প্রজন্মের দুই শাশুড়ি। বাড়িতে বিয়ে হয়ে আসা বৌমাকেও এই একই কথা শুনতে হয়। দ্বিতীয় প্রজন্মের শাশুড়ি আমি। ফুলশয্যার রাতের পর চা-টা আগের মতো ছেলেকেই শুধু দিয়ে আসি উপরে গিয়ে, নতুন বউকে আর দিই না। ওকে আবার সামলে দেন আমার শাশুড়ি। লিলিদি (লিলি চক্রবর্তী) সেই চরিত্রে। টিজারেও আছে সেই সংলাপ— বিয়ের পর জীবনটা প্রথম প্রথম নিম ফুলের মধুর মতোই তেতো, তার পর দেখবে মিষ্টি”।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Adblock Detected

Please Turn Off Your Ad Blocker.