কনম্যান সুকেশ চন্দ্রশেখরের সঙ্গে দিল্লির তিহার জেলে দেখা করতে যেতেন ছোটপর্দার বেশ কিছু পরিচিত মুখ। দিল্লি পুলিশের ইকোনমিক অফেন্স উইং তদন্তে নেমে এই তথ্য জানার পর তারা শনিবার টেলিভিশনের জনপ্রিয় মুখ নিকি তাম্বোলি ও অভিনেত্রী সোফিয়া সিংকে নিয়ে তিহার জেলে যায়। সুকেশের সঙ্গে তাঁরা কীভাবে সাক্ষাত করেছিল তা পুর্নগঠন করে দেখাবেন এই দুই অভিনেত্রী।
সুকেশ ২০০ কোটি টাকার আর্থিক তথরূপ মামলায় জেলে রয়েছে কারণ তদন্ত এখনও চলছে। পুলিশ রিপোর্ট মতে, জেলে থাকার সময় থেকেই জেলের অন্য আধিকারিকদের সহায়তায় সে বেশ কিছু বেআইনি কার্যকলাপ করেছে। আর এই বিষয়টিকে আরও স্পষ্ট করতে জেলের ভেতর আসার জন্য নিকি ও সোফিয়াকে তলব করা হয়।
দিল্লি পুলিশের ইওডব্লিউ অভিনেত্রী নিকি তাম্বোলি ও সোফিয়াকে শনিবার তিহার সেন্ট্রাল জেলের এক নম্বর সেলে নিয়ে যায় এবং সেখানেই সুকেশের সঙ্গে অতীতে দেখা করতে আসার ঘটনাটি পুর্নগঠন করা হয়।
সুকেশ চন্দ্রশেখর প্রাক্তন ফর্টিস হেলথকেয়ার প্রমোটার শিবিন্দর মোহন সিংয়ের স্ত্রী অদিতি সিং সহ একাধিক হাই–প্রোফাইল মানুষের সঙ্গে প্রতারণা করেছেন। ইওডব্লিউ ইতিমধ্যে বলিউড অভিনেত্রী জ্যাকলিন ফার্নান্ডেজ ও নোরা ফতেহি সহ প্রাক্তন টিভি সঞ্চালক পিঙ্কি ইরানী ও স্টাইলিস্ট লিপাক্সি এলওয়াডিকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে। পুলিশ সূত্রের খবর, তিহার জেলে সুকেশ চন্দ্রশেখরের বন্দি থাকার সময় বলিউড–টেলিভিশন তারকা সহ একাধিক মানুষ সুকেশের সঙ্গে দেখা করতে বিলাসবহুল গাড়িতে চেপে আসতেন এবং চন্দ্রশেখরের সঙ্গে দেখা করার জন্য জেলের ভেতর যেতেন। এঁদের মধ্যে নিকি তাম্বোলি ও সোফিয়া সিংও রয়েছেন। এখানে উল্লেখ্য, নিকি বিগ বস সহ বেশ কিছু রিয়্যালিটি শোতে অংশ নিয়েছেন এবং সোফিয়া বাংলা ও হিন্দি সিনেমায় কাজ করেছেন।
বিশেষ পুলিশ কমিশনার (অপরাধ) রবীন্দ্র যাদব বলেন, ‘আমরা এই মামলার পুঙ্খানুপুঙ্খ তদন্ত করছি এবং সেই কারণেই আমরা চন্দ্রশেখরের সঙ্গে অভিনেত্রীদের সাক্ষাতের দৃশ্যটি পুনরায় গঠন করেছি। এটি আমাদের পরিষ্কারভাবে বুঝতে সাহায্য করবে যে কীভাবে এই জালিয়াতি করা হয়েছিল। এটা আমাদের বিচারে সাহায্য করবে।’ তদন্তে আরও জানা গেছে যে চন্দ্রশেখরের জেলের ভিতরে টেলিভিশন, সোফা, কার্পেট এবং অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা সহ একটি উপযুক্ত অফিস ছিল। এটা সুকেশের অফিস বলেই মনে হয়েছিল, জেল নয়। জেলের সুরক্ষা কর্মীরাও আপোস করেছিল।
সুকেশের সঙ্গে যাঁরা বিলাসবহুল গাড়িতে চেপে দেখা করতে আসত তাঁদের গাড়ি পরীক্ষা করা ছাড়াই জেলের ভিতর ঢুকিয়ে দেওয়া হত। সুকেশ তার কোটি কোটি টাকা জেল আধিকারিকদের দিয়ে এইসব বেআইনি কাজ করাতো। পুলিশ অফিসার জানিয়েছেন যে অধিকাংশ সময় সুকেশ নিজেকে দক্ষিণ ভারতের প্রভাবশালী ব্যবসায়ী অথবা সিনেমার প্রযোজক বা টেলিভিশন চ্যানেলের কর্মকর্তা হিসাবে নিজেকে পরিচয় করাতো এবং অভিনেত্রীদের তার আসন্ন সিনেমায় প্রস্তাব দেওয়ার লোভ দিত। পুলিশ আধিকারিকরা জানিয়েছেন যে এই মামলার তদন্ত চলছে এবং এর সঙ্গে জড়িত অভিনেত্রীরাও রেহাই পাবেন না।