এই মুহূর্তে শোকাহত টলি পাড়া। জীবনাবসান ঘটল কিংবদন্তি অভিনেতা প্রদীপ মুখোপাধ্যায়ের। সোমবার সকালে শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন সত্যজিৎ রায়ের ‘সোমনাথ’। চিকিৎসকদের সমস্ত চেষ্টাকে ভুল প্রমাণ করে পরলোকে গমন করেন এই প্রবাদ প্রতিম অভিনেতা। মৃত্যুকালীন তাঁর বয়স হয়েছিল ৭৬ বছর। জানা গিয়েছে, সেপ্টিসেমিয়ার (রক্তে বিষক্রিয়া) সমস্যা ছিল অভিনেতার।
ফুসফুসের সংক্রমণ এবং নিউমোনিয়া নিয়ে দমদম ক্যান্টনমেন্ট মিউনিসিপ্যাল হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন অভিনেতা প্রদীপ মুখোপাধ্যায়ের। রবিবারও তাঁর অবস্থার উন্নতি হয়নি। সোমবার সকাল ৮টা বেজে ১৫মিনিটে শেষ ইহলোকের মায়া ত্যাগ করেন প্রদীপ মুখোপাধ্যায়। প্রবাদ প্রতিম শিল্পীর মৃত্যুতে ইতিমধ্যেই শোক প্রকাশ করেছেন অনেকে। তাদের মধ্যে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও রয়েছেন।
গত ১৩ ই আগস্ট নির্মল চক্রবর্তী পরিচালিত ‘দত্তা’ ছবির চার দিনের শুট শেষ করেন অভিনেতা প্রদীপ মুখোপাধ্যায়। সেটেই পালিত হয়েছিল তাঁর জন্মদিন। দীর্ঘদিন ধরে ফুসফুসের সমস্যায় ভুগছিলেন তিনি। তাই নানা রকম বিধিনিষেধ মেনে চলতেন এই অভিনেতা। এর মধ্যে দু’বার করোনা আক্রান্তও হয়েছেন তিনি। বাবা হাসপাতালে ভর্তির খবর শুনে রবিবার দুবাই থেকে এসেছেন প্রদীপের কন্যা।
বাংলার চলচ্চিত্র জগতে প্রদীপ মুখোপাধ্যায় একটি জনপ্রিয় নাম। সত্যজিৎ রায়ের ‘জন অরণ্য’ ছবির হাত ধরেই চলচ্চিত্রের আঙিনায় পা রাখেন তিনি।সেই ছবিতে তাঁর অনবদ্য অভিনয় এখনও রীতিমতো তাজা রয়েছে দর্শকদের মনের মণিকোঠায়। সত্যজিতের ‘জন অরণ্য’-র পাশাপাশি ‘শাখা প্রশাখা’ ছবিতেও অভিনয় করেছেন তিনি।
এছাড়াও কাজ করেছেন অসংখ্য ছবিতে। যেমন – বুদ্ধদেব দাশগুপ্ত-র ‘দূরত্ব’, ‘মন্দ মেয়ের উপাখ্যান’, ঋতুপর্ণ ঘোষের ‘হীরের আংটি’, ‘দহন’, ‘উৎসব’, সন্দীপ রায়ের ‘গোরস্থানে সাবধান’, ‘যেখানে ভূতের ভয়’, ‘বাদশাহী আংটি’, অপর্ণা সেনের ‘গয়নার বাক্স’, ইন্দ্রাশিস আচার্যর ‘বিলু রাক্ষস’, ‘পিউপা’-র মতো ছবি।
আবার বিমল ভৌমিকের ‘বন্দিনী কমলা’ ছবিতে এই অভিনেতার বিপরীতে নায়িকা ছিলেন বলিউড অভিনেত্রী সারিকা। বাংলার পাশাপাশি হিন্দি ছবিতেও কাজ করেছেন তিনি। সুজয় ঘোষ পরিচালিত ‘কাহানি ২: দুর্গা রাণী সিং ‘-এ বিদ্যা বালান, অর্জুন রামপালের সঙ্গেও কাজ করেছেন বাংলার এই অভিনেতা। স্বাভাবিকভাবেই তাঁর মৃত্যুতে শোকের ছায়া নেমে এসেছে টলিপাড়ায়।