রাজনীতি

ছুঁয়েও ছোঁয়া হলো না গুজরাট বিজেপির বাংলার বামফ্রন্টের নজির :-

দু -একবার নয়, সাত-সাত বার। বিজেপি এই নিয়ে গুজরাটে সাতবার জয় পেল। গোটা দেশে এমন নজর নেই, বাংলা ছাড়া একমাত্র।এ রাজ্যে ১৯৭৭ সালে সিপিএম নেতৃত্বাধীন বামফ্রন্ট সরকার প্রথম বার ক্ষমতায় আসে। তার পর টানা সাত বার। ২০০৬ সাল পর্যন্ত। গুজরাতেও জনতার রায় পর পর সাত বার বিজেপির পক্ষেই গেল। ১৯৯৫ সালে প্রথম বার সে রাজ্যে একক ভাবে ক্ষমতায় আসে বিজেপি। ২০২২ সালের ভোটের ফলও জানিয়ে দিল, এ বারও তারা সরকার গড়বে। বাংলা ছাড়া আর কোথাও এমনটা ঘটেনি। তবে বিজেপির হাতে পর পর সাত বার যাওয়া গুজরাত কিন্তু বাংলায় বামফ্রন্টের নজির ছুঁয়েও ছুঁতে পারল না। সামান্য হলেও দূরত্ব রয়ে গেল।

ক্ষমতায় ছিল সিপিএম নেতৃত্বকালীন বামফ্রন্ট এর রাজ্যে ১৯৭৭ সাল থেকে ২০০৬ সাল পর্যন্ত। বাংলায় বামেদের সব মিলিয়ে ৩৪ বছর। সাতবার পর পর জিতে ৩৪ বার ক্ষমতায় ছিল বামফ্রন্টরা।কিন্তু একই সংখ্যক বার গুজরাতে জয় পেলেও বিজেপি কিন্তু ৩৪ বছর সে রাজ্যের ক্ষমতায় থাকবে না। সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে,২০২৭ সালের ডিসেম্বরে যখন গেরুয়া শিবির আবার সে রাজ্যের বিধানসভা ভোটে অংশ নেবে, তখন তাদের সরকারের বয়স হবে ৩২ বছরের একটু বেশি। গুজরাটে বিজেপি এককভাবে প্রথমবার ১৯৫৫ সালে সরকার গড়লেও,১৯৯৬ সালের ১৯ সেপ্টেম্বর থেকে ১৯৯৮ সালের ৪ মার্চ পর্যন্ত তাদের সরকারের বাইরে থাকতে হয়েছিল। 

কেশুভাই পটেল ১৯৯৫ সালে গুজরাতের মুখ্যমন্ত্রী হয়েছিলেন। কিন্তু তাকে সাত মাসের মাথায় সরিয়ে নিয়ে আনা হয় সুরেশ মেহতাকে। এরপরে টালমাটাল পরিস্থিতি হয় গুজরাটে।একশো একুশ জন বিধায়ক থাকলেও বিদ্রোহের চাপে সে রাজ্যে মুখ্যমন্ত্রী বদলেছে বার বার। শঙ্করসিন বাঘেলা এবং দিলীপ পারিখ মুখ্যমন্ত্রী হয়েছিলেন ওই ৫ বছরে কেশুভাই ও সুরেশ ছাড়া।শেষ ২ জন বিজেপি ছেড়ে রাষ্ট্রীয় জনতা পার্টি গড়ে মুখ্যমন্ত্রী হয়েছিলেন। দুই সরকারের মাঝে ২৭ দিন রাষ্ট্রপতি শাসনও ছিল পশ্চিম ভারতের এই রাজ্যে।

১৯৯৮ সাল থেকে পরিস্থিতি বদলাতে শুরু করে। বিজেপি সেবার ১১৭ টি আসন পেয়েছিল।আবারও মুখ্যমন্ত্রী হয়েছিলেন কেশুভাই। তবে তিনি এ বারও ৫ বছর টিকতে পারেননি। সাড়ে তিন বছর পার হতে না হতেই তাঁকে সরিয়ে ২০০১ সালের অক্টোবরে মুখ্যমন্ত্রী করা হয় নরেন্দ্র মোদীকে। ২০০২ সালে ১২৭ আসন নিয়ে ক্ষমতায় আবারও বিজেপি। মোদী ফের মুখ্যমন্ত্রী হন।২০০৭ সালে ১০ আসন কমে জয় মেলে ১১৭ আসনে। এরও ৫ বছর পরে আরও দু’টি আসন কমে। বিজেপি ২০১২ সালে পায় ১১৫টি আসন। আর গত বিধানসভা নির্বাচনে অনেকটা কমে বিজেপির আসনসংখ্যা হয়ে যায় ৯৯। ষষ্ঠ বার গুজরাত জয়ে আসন কমলেও সপ্তম বার বিরোধী শিবিরকে একেবারে নিশ্চিহ্ন করে দিয়েছে পদ্ম শিবির।

অন্যদিকে বামফ্রন্ট ১৯৭৭ সালে প্রথমবার কংগ্রেসকে হারিয়ে ক্ষমতায় আসে।তার পর ১৯৮২, ১৯৮৭, ১৯৯১, ১৯৯৬, ২০০১ ও ২০০৬— ধারাবাহিক ভাবে জয় পেয়েছিল সিপিএম নেতৃত্বাধীন বামফ্রন্ট। এর মধ্যে ১৯৭৭ থেকে ২০০০ সালের ৬ নভেম্বর পর্যন্ত পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী ছিলেন জ্যোতি বসু। ২০০০ সালের ৬ নভেম্বর মুখ্যমন্ত্রী পদে শপথ নেন সিপিএম নেতা বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য। তাঁর নেতৃত্বেই ২০০১ ও ২০০৬ সালের বিরাট জয় পেয়েছিল বামফ্রন্ট।

বাংলায় বামফ্রন্ট এবং গুজরাটে বিজেপি এরকম নজির এই দুই রাজ্যের ক্ষেত্রেই আছে।তবে ক্ষমতায় থাকার সময়সীমায় গুজরাতকে হারিয়ে সংখ্যাতত্ত্বের হিসাবে এগিয়ে রইল সেই বাংলাই।

Live Bengal Digital Desk

Recent Posts

অভিনয়ের পাশাপাশি রয়েছে এই সকল গুণও, চিনুন ফুলকি খ্যাত দিব্যানিকে

জি বাংলার নতুন ধারাবাহিক ‘ফুলকি’র শুটিং শুরু হয়েছে গত রবিবার থেকে। এই ধারাবাহিকের নায়িকা নবাগতা…

6 months ago

একটা সিনেমা করেই এত অহংকার! সোশ্যাল মিডিয়ায় ইধিকার ফ্যানদের ট্রোলের মুখে সৌমিতৃষা

গত ২২শে ডিসেম্বর প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পেয়েছে প্রধান। অভিজিৎ সেন পরিচালিত এই ছবিটিতে দেবের বিপরীতে অভিনয়…

6 months ago

অভিনয়ে তো তুখোর তিনি ছিলেনই, কিন্তু পড়াশোনায় কেমন সৌমিতৃষা?

সৌমিতৃষা কুণ্ডু। বাংলা টেলিভিশনের জনপ্রিয় অভিনেত্রী। তার অভিনীত মিঠাই চরিত্রটি দর্শকদের কাছে ব্যাপক জনপ্রিয়তা পেয়েছে।…

6 months ago

বহুজন ঐক্য মঞ্চের নেতা প্রশান্ত রায়ের উপর পুলিশি সন্ত্রাস! জানানো হলো প্রতিবাদ

বহুজন ঐক্য মঞ্চের অন্যতম সংগঠক, শিক্ষক ও সমাজ সংস্কারক প্রশান্ত রায়ের উপর তার বাড়িতে পুলিশি…

6 months ago

মেহেন্দির বিরুদ্ধে লড়াই করতে জগদ্ধাত্রী-কৌশিকীর সাহায্য করতে এলো তাদের এক পুরনো বন্ধু!

জি বাংলার অত্যন্ত জনপ্রিয় ধারাবাহিক হলে জগদ্ধাত্রী। জগদ্ধাত্রী কৌশিকীর কেবিনে আসার পরেই তাকে জানায় কৌশিকির…

6 months ago

বাস্তবের প্রেমই কি পর্দায় ফুটে উঠছে? সত্যিই কি একে অপরের সঙ্গে সম্পর্কে আছে জ্যাস-স্বয়ম্ভু?

জি বাংলার জনপ্রিয় ধারাবাহিক "জগদ্ধাত্রী"তে এবার রহস্যের ঘনঘটা বেড়েছে। জগদ্ধাত্রীর মৃত্যুর পরও তার ছোট বোন…

6 months ago