সুদীপ-তাপস সংঘর্ষে সরগরম বঙ্গ রাজনীতি

গত কয়েকদিন ধরে সুদীপ-তাপস বিতর্কে উত্তপ্ত বঙ্গ রাজনীতি। রাজ্যের শাসক শিবিরের সাংসদ সুদীপের বিরুদ্ধে বিধায়ক তাপস মুখ খোলার পর থেকেই রাজনৈতিক চাপানউতোর শুরু হয়ে যায়।

সুদীপ সংবাদমাধ্যমকে জানান, ‘হাতি চলে বাজার… কী একটা কথা আছে না? নো কমেন্টস।’ বৃহস্পতিবার প্রকাশ্যেই বলে দেন। তার ঠিক আগেই তাপস বলেছিলেন, ‘‘এই সখ্য, এই সম্পর্ক, যাওয়া-আসা, পুজো, সামাজিক অনুষ্ঠানগুলো শুরু হয়, দলের কর্মীরাও যদি ওঠাবসা শুরু করে, তবে দল কি সেটা ভাল চোখে দেখবে? সেই পরিস্থিতি কি আমরা সামাল দিতে পারব? দলীয় সহকর্মীদের যেন অসম্মান, অপমান করার চেষ্টা না হয়।’’

সুদীপের নাম না করলেও তাপস প্রশ্ন করেন, ‘‘অন্য কেউ এমনটা করলে তিনি কোন চোখে দেখতেন?’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘শব্দ ব্রহ্ম! সে কী করে ফেরত নেব? বলে দিয়েছি যা বলে দিয়েছি।’’

প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, গত সোমবার রাতে উত্তর কলকাতা বিজেপি সভাপতি হিসেবে মনোনীত হন তমোঘ্ন ঘোষ। তৃণমূলে থাকার সময় সুদীপের ‘ঘনিষ্ঠ’ হিসাবে পরিচিত ছিলেন তিনি। সেই তমোঘ্নের বাড়ির পুজোয় সুদীপের উপস্থিতি নিয়ে মঙ্গলবার সাংবাদিক বৈঠক করে প্রশ্ন তোলেন শাসক দলের বিধায়ক তাপস।

তাপসের মতে, সুদীপের কথাতেই তমোঘ্নকে উত্তর কলকাতা বিজেপির সভাপতি করা হয়েছে। তাঁর আরও অভিযোগ ছিল, ‘‘দলনেত্রী (মমতা)-র ভাবমূর্তিকে ব্যক্তিগত স্বার্থে কাজে লাগিয়ে নিজের ব্যক্তিস্বার্থ চরিতার্থ করার পাশাপাশি বিরোধী দল বিজেপির সঙ্গে সুসম্পর্ক চালিয়ে যাচ্ছেন সুদীপ।’’

সুদীপ বৃহস্পতিবার বলেছিলেন, ‘‘হাতি চলে বাজার, কুত্তা ভোকে হাজার।” সুদীপের এই মন্তব্যের প্রেক্ষিতে শুক্রবার তাপস একটি সাক্ষাৎকারে বলেন, ‘‘ব্যক্তিগত ভাবে আমি সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়- ফন্দ্যোপাধ্যায়দের কথার উত্তর দেওয়ার জায়গায় নেই। আমিও ৫ বারের বিধায়ক, দশ বারের কাউন্সিলর। আমিও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আশীর্বাদধন্য।’’

সুদীপকে নিশানা করে তাপস বলেন, ‘‘আমি কালিমালিপ্ত নই, আমি দুর্নীতিগ্রস্ত নই, আমি হেফাজতে থাকা লোক নই।’’ তাপস দাবি করেন, ‘‘আমরা দলের ডোবারম্যান, আমরা দলের গ্রে-হাউন্ড, গ্রেট-ডেন। সতর্ক করি, শত্রু দেখলে তেড়ে যাই। কিন্তু আমরা সাদা হাতি নই, অনুৎপাদক নই। আমরা নরেন্দ্র মোদীজি, অমিত শাহজি, ওম বিড়লার কাছে গিয়ে শুঁড় নাচিয়ে বন্দনা, ভজনা করি না।’’

সুদীপ-তাপসের এই সংঘর্ষ নিয়ে ইতিমধ্যেই ঘাসফুল শিবিরে মধ্যে ভাগ দেখা গিয়েছে। তাপসকে বোঝাতে তৃণমূলের মুখপাত্র কুণাল ঘোষ তাঁর বাড়িতে গিয়েছিলেন। তাপসকে সমর্থন করে প্রবীণ সাংসদ সৌগত রায় জানিয়েছেন অন্য দল করেন বলে তিনি নিজের দাদা তথাগত রায়ের বাড়িতেও যান না। অন্য দিকে, তাপসের সমালোচনা করেছেন কামারহাটির বিধায়ক মদন মিত্র। তবে দলনেত্রী মমতা যে তাপসের সরব হওয়াকে পছন্দ করছেন না সেটা মুখে না হলেও আচরণে বুঝিয়ে দিয়েছেন।

Live Bengal Digital Desk

Recent Posts

অভিনয়ের পাশাপাশি রয়েছে এই সকল গুণও, চিনুন ফুলকি খ্যাত দিব্যানিকে

জি বাংলার নতুন ধারাবাহিক ‘ফুলকি’র শুটিং শুরু হয়েছে গত রবিবার থেকে। এই ধারাবাহিকের নায়িকা নবাগতা…

6 months ago

একটা সিনেমা করেই এত অহংকার! সোশ্যাল মিডিয়ায় ইধিকার ফ্যানদের ট্রোলের মুখে সৌমিতৃষা

গত ২২শে ডিসেম্বর প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পেয়েছে প্রধান। অভিজিৎ সেন পরিচালিত এই ছবিটিতে দেবের বিপরীতে অভিনয়…

6 months ago

অভিনয়ে তো তুখোর তিনি ছিলেনই, কিন্তু পড়াশোনায় কেমন সৌমিতৃষা?

সৌমিতৃষা কুণ্ডু। বাংলা টেলিভিশনের জনপ্রিয় অভিনেত্রী। তার অভিনীত মিঠাই চরিত্রটি দর্শকদের কাছে ব্যাপক জনপ্রিয়তা পেয়েছে।…

6 months ago

বহুজন ঐক্য মঞ্চের নেতা প্রশান্ত রায়ের উপর পুলিশি সন্ত্রাস! জানানো হলো প্রতিবাদ

বহুজন ঐক্য মঞ্চের অন্যতম সংগঠক, শিক্ষক ও সমাজ সংস্কারক প্রশান্ত রায়ের উপর তার বাড়িতে পুলিশি…

6 months ago

মেহেন্দির বিরুদ্ধে লড়াই করতে জগদ্ধাত্রী-কৌশিকীর সাহায্য করতে এলো তাদের এক পুরনো বন্ধু!

জি বাংলার অত্যন্ত জনপ্রিয় ধারাবাহিক হলে জগদ্ধাত্রী। জগদ্ধাত্রী কৌশিকীর কেবিনে আসার পরেই তাকে জানায় কৌশিকির…

6 months ago

বাস্তবের প্রেমই কি পর্দায় ফুটে উঠছে? সত্যিই কি একে অপরের সঙ্গে সম্পর্কে আছে জ্যাস-স্বয়ম্ভু?

জি বাংলার জনপ্রিয় ধারাবাহিক "জগদ্ধাত্রী"তে এবার রহস্যের ঘনঘটা বেড়েছে। জগদ্ধাত্রীর মৃত্যুর পরও তার ছোট বোন…

6 months ago